অর্থ আইন, ২০২৪ এর মাধ্যমে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এ কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনয়ন করা হয়েছে। নিম্নে আনীত সংশোধনীসমূহের বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
৬.১ অনুমোদিত আনুতোষিক তহবিল” এবং “অনুমোদিত বার্ধক্য তহবিল বা পেনশন তহবিল” এর সংজ্ঞায় সংশোধন
আয়কর আইনে অনুমোদিত “আনুতোষিক তহবিল” এবং “অনুমোদিত বার্ধক্য তহবিল বা পেনশন তহবিল” বলতে বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত আনুতোষিক তহবিল, বার্ধক্য তহবিল ও পেনশন তহবিল বুঝাতো। অর্থ আইন, ২০২৪ এর মাধ্যমে আনীত পরিবর্তনের ফলে অনুমোদিত আনুতোষিক তহবিল, বার্ধক্য তহবিল ও পেনশন তহবিল বলতে কর কমিশনার কর্তৃক অনুমোদিত আনুতোষিক তহবিল, বার্ধক্য তহবিল ও পেনশন তহবিল বুঝাবে।
৬.২ “আর্থিক প্রতিষ্ঠান” এর সংজ্ঞা এর বিলোপ
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (১১) তে “আর্থিক প্রতিষ্ঠান” এর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছিল। উক্ত সংজ্ঞাতে “আর্থিক প্রতিষ্ঠান” অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নং আইন) এ সংজ্ঞায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বলা হয়েছিল। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নং আইন) বিলুপ্তির ফলে উক্ত সংজ্ঞা অর্থ আইন, ২০২৪ এর মাধ্যমে বিলুপ্ত করা হয়।
৬.৩ “আয়” এর সংজ্ঞায় সংশোধন
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (১৩) তে “আয়” এর সংজ্ঞা রয়েছে। অর্থ আইন, ২০২৪ এর মাধ্যমে এই দফায় সংশোধনীর মাধ্যমে নিম্নবর্ণিত উপায়ে অর্জিত পরিসম্পদ ব্যতীত অন্য যেকোনোভাবে অর্জিত পরিসম্পদ “আয়” অর্থে অন্তর্ভুক্ত হবে, যথা;-
(অ) প্রাকৃতিকভাবে অর্জিত পরিসম্পদ;
(আ) কোনো ব্যক্তির স্বীয় সৃষ্ট পরিসম্পদ;
(ই) কোনো দায় বা বন্ধকের বিপরীতে অধিগ্রহণকৃত (foreclosure) পরিসম্পদ;
(ঈ) উত্তরাধিকার, উইল, অছিয়ত বা ট্রাস্টমূলে অর্জিত কোনো পরিসম্পদ;
(উ) বিনিময় বা ক্রয়মূলে অর্জিত কোনো পরিসম্পদ।
এই পরিবর্তনের ফলে সকল প্রকার দান,অনুদান, উপহার, বা অন্য কোনোভাবে অর্জিত পরিসম্পদ আয় হিসাবে গণ্য হবে এবং করারোপিত হবে।
৬.৪ “কর্মচারী” এর সংজ্ঞা প্রতিস্থাপন
আয়কর আইন, ২০২৩ ধারা ২ এর দফা (২৫) অনুযায়ী “কর্মচারী” অর্থ কোনো কোম্পানির ক্ষেত্রে, অর্থ ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা অন্য যেকোনো পরিচালক ও এইরূপ কোনো ব্যক্তি এবং ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবেন পদবি নির্বিশেষে কোম্পানির ব্যবস্থাপনার সহিত সম্পর্কিত কোনো দায়িত্ব পালন করেন।
অর্থ আইন, ২০২৪ এর মাধ্যমে উক্ত সংজ্ঞা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। নূতন সংজ্ঞা অনুযায়ী “কর্মচারী” অর্থ যেকোনো কর্মচারী এবং নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণও এর অন্তর্ভুক্ত হবেন, যথা:-
(অ) কোনো কোম্পানির ক্ষেত্রে, তার যেকোনো পরিচালক বা ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং পদবি নির্বিশেষে ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পর্কিত কোনো দায়িত্ব পালন করেন এরূপ কোনো ব্যক্তি;
(আ) কোম্পানি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে, পদবি নির্বিশেষে ব্যবসায়ের ব্যবস্থাপনার সহিত সম্পর্কিত কোনো দায়িত্ব পালন করেন এরূপ কোনো ব্যক্তি;
(ই) এরূপ কোনো ব্যক্তি যিনি নিয়োগকারী হতে বেতন প্রাপ্ত হন, নিয়োগকারীর নিয়ন্ত্রণাধীন ও নিয়োগকারীর নির্দেশনা মোতাবেক পরিচালিত হন এবং নিয়োগকারী কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসরণ করে কাজ করেন;
(ঈ) আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৩২ অনুযায়ী চাকরি হতে আয় প্রাপ্ত হয় এরূপ সকল ব্যক্তি।
তবে, চা-বাগানের কোনো শ্রমিক এবং দিনমজুর এর অন্তর্ভুক্ত হবে না।
৬.৫ “কর কমিশনার” এর সংজ্ঞা সংযোজন
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (২৬ক) সংযোজনের মাধ্যমে “কর কমিশনার” এর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। এই সংজ্ঞানুযায়ী “কর কমিশনার” অর্থ ধারা ৪ এ উল্লেখিত এবং ধারা ৫ এর অধীন নিযুক্ত বা পদায়িত কর কমিশনার, মহাপরিচালক (কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল) ও মহাপরিচালক (পরিদর্শন)।
৬.৬ “কর নির্ধারণ” এর সংজ্ঞা সংযোজন
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (২৬খ) সংযোজনের মাধ্যমে “কর নির্ধারণ” এর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। এই সংজ্ঞানুযায়ী “কর নির্ধারণ” অর্থ এই আইনের অধীন যেকোনো প্রকারের কর নির্ধারণ এবং পুনঃকর নির্ধারণ, অতিরিক্ত কর নির্ধারণ, অধিকতর কর নির্ধারণও এর অন্তর্ভুক্ত হবে।
৬.৭ “চার্টার্ড সেক্রেটারি” এর সংজ্ঞা সংযোজন
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (৩৬ক) সংযোজনের মাধ্যমে “চার্টার্ড সেক্রেটারি” এর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। এই সংজ্ঞানুযায়ী “চার্টার্ড সেক্রেটারি” অর্থ চার্টার্ড সেক্রেটারীজ আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ২৫ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (৬) এ সংজ্ঞায়িত কোনো চার্টার্ড সেক্রেটারি।
৬.৮ “দাতব্য উদ্দেশ্য” এর সংজ্ঞায় সংশোধন
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (৪৩) এ সংশোধন আনীত হয়েছে। আনীত সংশোধনীর পূর্বে সাধারণ জন-উপযোগের কোনো উদ্দেশ্যের উন্নতি বা প্রসার দাতব্য উদ্দেশ্য বলে বিবেচিত হতো না যদি না তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হয়; এবং যদি তা নিম্নবর্ণিত কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়-
(১) কারবার, বাণিজ্য বা ব্যবসায় প্রকৃতির কোনো কার্যক্রম তা যেকোনো ধরনের বা প্রকারের হোক না কেন; অথবা
(২) পণের বিনিময়ে কোনো সেবা প্রদান করলে এবং কোনো আয়বর্ষে এরূপ পণের মোট মূল্য ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অতিক্রম করলে;
আনীত সংশোধনীর ফলে সাধারণ জন-উপযোগের কোনো উদ্দেশ্যের উন্নতি বা প্রসার দাতব্য উদ্দেশ্য বলে বিবেচিত হবে না-
(অ) যদি না তা কর কমিশনার কর্তৃক অনুমোদিত হয়; এবং
(আ) যদি তা নিম্নবর্ণিত কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়-
(১) কারবার, বাণিজ্য বা ব্যবসায় প্রকৃতির কোনো কার্যক্রম তা যেকোনো ধরনের বা প্রকারের হোক না কেন; অথবা
(২) পণের বিনিময়ে কোনো সেবা প্রদান করলে এবং কোনো আয়বর্ষে এরূপ পণের মোট মূল্য ১ (এক) কোটি টাকা অতিক্রম করলে;
৬.৯ দাতব্য উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত সত্তাসমূহের করারোপণ সংক্রান্ত স্পষ্টিকরণ।
আয়কর আইন, ২০২৩ ধারা ২ এর দফা (১৩) তে সংজ্ঞায়িত ‘আয়’ রয়েছে এমন সকল করযোগ্য সত্তার আয়কর পরিশোধের আইনানুগ বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আয়কর আইন, ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসিল এর অংশ ১ এর দফা ১২ অনুযায়ী যেকোনো দান বা অনুদান যদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা কর কমিশনার কর্তৃক অনুমোদিত দাতব্য উদ্দেশ্য পরিচালিত কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত হয় এবং ধর্মীয় বা দাতব্য উদ্দেশ্যে ব্যয়িত হয় তা মোট আয় হইতে বাদ যাবে। অর্থাৎ উক্তরূপ voluntary contribution বা grant বা donation যদি কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা কর কমিশনার কর্তৃক অনুমোদিত দাতব্য উদ্দেশ্যে পরিচালিত কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত হয় এবং ধর্মীয় বা দাতব্য উদ্দেশ্যে ব্যয়িত হয় তবে তা উক্ত প্রতিষ্ঠানের হাতে করযোগ্য আয় হিসেবে বিবেচিত হবে না। এছাড়াও এ সকল voluntary contribution বা grant বা donation যদি এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কর্তৃক অনুমোদিত কোনো ব্যক্তি কর্তৃক গৃহীত হয় তবে তাও উক্ত ব্যক্তির হাতে করযোগ্য আয় হিসেবে গণ্য হবে না। তবে এক্ষেত্রে সবর্দা আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৭৬ এর উপ-ধারা (৫) ও (৬) প্রযোজ্য হবে। ষষ্ঠ তফসিল এর অংশ ১ এর দফা ১২ নিম্নরূপ, যথা:-
(১২) যেকোনো দান বা অনুদান যদি উহা-
(ক) ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা কর কমিশনার কর্তৃক অনুমোদিত দাতব্য উদ্দেশ্য পরিচালিত কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত হয় এবং ধর্মীয় বা দাতব্য উদ্দেশ্যে ব্যয়িত হয়; বা
(খ) এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কর্তৃক অনুমোদিত কোনো ব্যক্তি কর্তৃক গৃহীত হয়।
৬.৯.১ দাতব্য প্রতিষ্ঠানের আইনানুগ সংজ্ঞা কী?
আয়কর আইনে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞা প্রদান করা হয়নি। তবে, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২(৪৩) এ দাতব্য উদ্দেশ্য এর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। ফলে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি আইনে সংজ্ঞায়িত দাতব্য উদ্দেশ্যে কোনো voluntary contribution বা grant বা donation গ্রহণ করে তবে তাকে কেবল উক্ত voluntary contribution বা grant বা donation গ্রহণের প্রেক্ষিতে দাতব্য প্রতিষ্ঠান বলা যাবে না। দাতব্য প্রতিষ্ঠান হতে হলে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণরূপে দাতব্য উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে এবং এ মর্মে কর কমিশনার হতে অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
৬.৯.২ প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রমের পাশাপাশি দাতব্য কার্যক্রম পরিচালনা কি প্রতিষ্ঠানকে দাতব্য প্রতিষ্ঠান করে তোলে?
কোনো প্রতিষ্ঠান তার স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি দাতব্য উদ্দেশ্যে যেকোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। এক্ষেত্রে কোনো প্রকার আইনগত বাধা নেই। তবে, এক্ষেত্রে এই আইনের উদ্দেশ্যে কেবল কর কমিশনার কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান-ই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সুযোগ সুবিধা প্রাপ্য হবেন। এই ক্ষেত্রে কর কমিশনার কঠোরভাবে আয়কর আইন, ২০২৩ এবং এই পরিপত্রের অনুশাসন ও ব্যাখ্যা অনুসরণ করবেন।
৬.৯.৩ কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সাধারণভাবে দাতব্য উদেশ্যে পরিচালিত কিন্তু আয়কর আইনে সংজ্ঞায়িত ‘দাতব্য উদ্দেশ্য’ পরিচালিত না হলে তাকে দাতব্য প্রতিষ্ঠান বলা যাবে কি?
না। যেমন আয়কর আইন অনুযায়ী কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠান পণের বিনিময়ে সেবা প্রদান করলে এবং কোনো আয়বর্ষে এরূপ পণের মোট মূল্য ১ (এক) কোটি টাকা অতিক্রম করলে উক্ত প্রতিষ্ঠান দাতব্য উদ্দেশ্যে পরিচালিত নয় বলে গণ্য হবে।
৬.৯.৪ Non-Profit Organization কি দাতব্য প্রতিষ্ঠান?
যদি কোনো Non-Profit Organization এর কার্যক্রম কারবার, বাণিজ্য বা ব্যবসায় প্রকৃতির হয় অথবা কোনো Non-Profit Organization পণের বিনিময়ে সেবা প্রদান করলে এবং কোনো আয়বর্ষে এরূপ পণের মোট মূল্য ১ (এক) কোটি টাকা অতিক্রম করলে উক্ত প্রতিষ্ঠান দাতব্য উদ্দেশ্যে পরিচালিত নয় বলে গণ্য হবে। আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২(৭০) অনুযায়ী “ব্যবসা” অর্থে অন্তর্ভুক্ত হবে-
(ক) কোনো ট্রেড, বাণিজ্য বা পণ্য উৎপাদন;
(খ) কোনো ট্রেড, বাণিজ্য বা পণ্য উৎপাদনধর্মী কোনো ঝুঁকি গ্রহণ বা কর্মপ্রচেষ্টা;
(গ) লাভজনক বা অলাভজনক কোনো সত্তার পণ্য বা সেবার বিনিময়; বা
(ঘ) যেকোনো পেশা বা বৃত্তি;
অর্থাৎ ব্যবসা For Profit এবং Not for Profit হতে পারে।
৬.৯.৫ দাতব্য প্রতিষ্ঠানসমূহ কি করমুক্ত?
না। দাতব্য প্রতিষ্ঠানসমূহকে আয়কর আইনের কোনো বিধান দ্বারা করমুক্ত কোনো সত্তা হিসেবে গণ্য করা হয়নি। তবে, দাতব্য প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক গৃহীত স্বেচ্ছায় প্রদত্ত চাঁদা কেবল ধর্মীয় বা দাতব্য উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হলে তা মোট আয় হইতে বাদ যাবে। এছাড়া, দাতব্য প্রতিষ্ঠানসমূহের অন্যকোনো প্রকার আয় না থাকলে উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বাভাবিক নিয়মে কর পরিশোধ করতে হবে না।
উদাহরণ ১
নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল ট্রাস্ট চট্টগ্রাম ভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান যা সাধারণ জন-উপযোগের কোনো উদ্দেশ্যের উন্নতি বা প্রসারে নিয়োজিত। এর সাধারণ জন-উপযোগের কোনো উদ্দেশ্যের উন্নতি বা প্রসার ব্যতীত অন্য কোনো কর্মকান্ডে কোনো প্রকারের সংশ্লেষ নেই। এ ট্রাস্ট কেবল গৃহীত দান বা অনুদানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এ ট্রাস্ট কোনো প্রকারের বাণিজ্য বা ট্রেডিং বা কারবার প্রকৃতির কোনো কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত নয়। ট্রাস্টের সুদ আয় এবং গৃহীত দান-অনুদান ব্যতীত অন্যকোনো আয় নেই। নাসির উদ্দিন মেমোরিয়াল ট্রাস্ট কর কমিশনার কর্তৃক দাতব্য উদ্দেশ্যে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বীকৃত। আইনের অন্যান্য বিধান পরিপালন সাপেক্ষে এই ট্রাস্ট কর্তৃক গৃহীত কেবল দান বা অনুদান করমুক্ত থাকবে।
উদাহরণ ২
সবুজ বাংলা ফাউন্ডেশন ডেইরি, গবাদি পশুর মোটা-তাজাকরণ ও মাংস বিক্রয় কর্মকান্ডে নিয়োজিত। এ সকল কর্মকান্ড হতে তাদের আয় রয়েছে। এছাড়াও তারা বিভিন্ন ব্যক্তি হতে দান অনুদান প্রাপ্ত হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের সকল প্রকার আয় দিয়ে সাধারণ জন-উপযোগের উদ্দেশ্যের উন্নতি বা প্রসারে নিয়োজিত। এ প্রতিষ্ঠান দাতব্য উদ্দেশ্যে পরিচালিত বলে গণ্য হবে কিনা? না। হবে না। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি কারবার, বাণিজ্য বা ব্যবসায় প্রকৃতির কোনো কার্যক্রমের সাথে জড়িত সেহেতু তার সকল প্রকারের আয় স্বাভাবিক নিয়মে করযোগ্য হবে।
৬.৯.৬ দাতব্য উদ্দেশ্য কী এবং এর ব্যাপ্তি কত?
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২(৪৩) এ দাতব্য উদ্দেশ্য এর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে যা নিম্নরূপ:
“দাতব্য উদ্দেশ্য” অর্থ-
(ক) দরিদ্রের জন্য ত্রাণ, শিক্ষা ত্রাণ, চিকিৎসা ত্রাণ; এবং
(খ) সাধারণ জন-উপযোগের কোনো উদ্দেশ্যের উন্নতি বা প্রসার,
তবে সাধারণ জন-উপযোগের কোনো উদ্দেশ্যের উন্নতি বা প্রসার দাতব্য উদ্দেশ্য বলিয়া বিবেচিত হইবে না-
(অ) যদি না উহা কর কমিশনার কর্তৃক অনুমোদিত হয়; এবং
(আ) যদি উহা নিম্নবর্ণিত কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়-
(১) কারবার, বাণিজ্য বা ব্যবসায় প্রকৃতির কোনো কার্যক্রম উহা যেকোনো ধরনের বা প্রকারের হোক না কেন; অথবা
(২) পণের বিনিময়ে কোনো সেবা প্রদান করিলে এবং কোনো আয়বর্ষে এইরূপ পণের মোট মূল্য ১ (এক) কোটি টাকা অতিক্রম করিলে;
অর্থাৎ দরিদ্রের জন্য যেকোনো প্রকারের ত্রাণ, যেকোনো শিক্ষা ত্রাণ, যেকোনো চিকিৎসা ত্রাণ কোনো প্রকারের শর্ত পরিপালন ব্যতিরেকেই দাতব্য উদ্দেশ্য হিসেবে গণ্য হবে। এছাড়াও নিম্নবর্ণিত তিনটি শর্ত পরিপালন সাপেক্ষে সাধারণ জন–উপযোগের কোনো উদ্দেশ্যের উন্নতি বা প্রসার দাতব্য উদ্দেশ্য বলে বিবেচিত হবে, যথা:-
অ। উক্তরূপ সাধারণ জন-উপযোগের উন্নতি বা প্রসার কর কমিশনার কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে;
আ। উক্তরূপ সাধারণ জন-উপযোগের উন্নতি বা প্রসার কোনো প্রকারের কারবার, বাণিজ্য বা ব্যবসায়িক প্রকৃতির হওয়া যাবে না;
ই। উক্তরূপ সাধারণ জন-উপযোগের বা উপযোগসমূহের উন্নতির বা প্রসারের বিনিময়ে কোনো পণ গ্রহণ করিলে তার মোট মূল্য বার্ষিক অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা হবে।
ত্রাণসহ সাধারণ জন-উপযোগসমূহের উন্নতি বা প্রসার বলতে কী কী কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত হতে পারে তার একটি বিবরণ নিম্নবর্ণিত সারণীতে উপস্থাপন করা হলো, যথা:
সারণী
ক্রমিক নং | বর্ণনা | কার্যক্রম |
১। দরিদ্রের জন্য ত্রাণ | ||
১। | খাদ্য বিতরণ কর্মসূচী | বিনামূল্যে দরিদ্র মানুষের মাঝে যেকোনো প্রকারের খাদ্য সরবরাহ, যেকোনো মুদি সরবরাহ। |
২। | পোষাক বিতরণ কর্মসূচী | বিনামূল্যে দরিদ্র মানুষের মাঝে যেকোনো প্রকারের পোশাক, জুতা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করা। |
৩। | আশ্রয়ণ সহায়তা | গৃহহীনদের জন্য বিনামূল্যে গৃহের ব্যবস্থা। |
৪। | স্বাস্থ্য পরিষেবা | বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান। |
৫। | প্রশিক্ষণ | দারিদ্রতা হতে উত্তরণের নিমিত্ত বিনামূল্যে যেকোনো কর্মমুখী প্রশিক্ষণ প্রদান। |
৬। | কমিউনিটি উন্নয়ন প্রকল্প | যেকোনো প্রকারের অবকাঠামোগত, স্যানিটেশন, এবং বিশুদ্ধ পানিতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অধিগম্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গৃহীত বিনিময়হীন যেকোনো উদ্যোগ। |
৭। | দুর্যোগ ত্রাণ | খাদ্য, জল, বস্ত্র বিতরণ এবং অস্থায়ী আশ্রয় প্রদানসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জরুরী পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে বিনামূল্যে সহায়তা করা। |
৮। | অ্যাডভোকেসি এবং সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান | দারিদ্র্য সম্পর্কিত বিষয়গুলি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, নীতি পরিবর্তনের পক্ষে বিনামূল্যে অ্যাডভোকেসি করা এবং দারিদ্র্য ও অসমতার মূল কারণগুলিকে মোকাবেলা করার লক্ষ্যে গৃহীত যেকোনো পদক্ষেপ যার বিনিময়ে কোনো ব্যক্তি বা কমিউনিটিকে কোনো মূল্য পরিশোধ করতে হয় না। |
২। চিকিৎসা ত্রাণ | ||
১। | ওষুধ ও চিকিৎসার সরঞ্জামাদি বিতরণ | বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বিতরণ। |
২। | মেডিক্যাল ক্যম্প | সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য চেক-আপ, পরামর্শ, টিকা এবং প্রাথমিক চিকিৎসাসহ বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য চিকিৎসা শিবিরের আয়োজন। |
৩। | মোবাইল ক্লিনিক | প্রত্যন্ত ও সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় বিনামূল্যে ওষুধসহ যেকোনো প্রকারের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান। |
৪। | ডিজাস্টার রেসপন্স টিম | প্রাকৃতিক দুর্যোগ, সংঘাত, বা মানবিক সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও কমিউনিটিকে জরুরী চিকিৎসা সেবা এবং সহায়তা প্রদানের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, ওষুধ, চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবকদের একত্রিত করা এবং বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদান। |
৫। | স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম | প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন, পুষ্টি এবং রোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো দল বা কমিউনিটিকে সচেতন করার জন্য কর্মশালা, সেমিনার এবং সচেতনতা প্রচারাভিযান পরিচালনা করা। |
৬। | টেলিমেডিসিন পরিষেবা | ভৌগলিক বাধা, চলাফেরার সমস্যা বা অন্যান্য সীমাবদ্ধতার কারণে স্বাস্থ্যসেবায় অধিগম্যতার ক্ষেত্রে সৃষ্ট বাধা দূরীকরণে বিনামূল্যে প্রদত্ত যেকোনো টেলিমেডিসিন পরিষেবা। |
৭। | অরক্ষিত (Vulnerable) জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য পরিষেবা | অরক্ষিত জনগোষ্ঠী যেমন- উদ্বাস্তু, বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি, বয়স্ক ব্যক্তি, শিশু এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিনামূল্যে প্রদত্ত যেকোনো প্রকারের স্বাস্থ্য পরিষেবা। |
৮। | প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি | স্বাস্থ্যসেবা, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং জরুরী প্রতিক্রিয়া (emergency response) প্রদানে স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, স্বেচ্ছাসেবক ও কমিউনিটি সদস্যদের জ্ঞান এবং দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সদস্যদের জন্য বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং কর্মশালা পরিচালনা করা। |
৯। | মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা | ট্রমা, স্ট্রেস, বা মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাধি দ্বারা প্রভাবিত ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা, কাউন্সেলিং এবং মনোজাগতিক সাহায্য প্রদান। |
১০। | স্বাস্থ্য অবকাঠামো | সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা, ক্লিনিক এবং হাসপাতালগুলির নির্মাণ, সংস্কার এবং উন্নতিতে অর্থ দান বা এ সকল অবকাঠামো নির্মাণপূর্বক হস্তান্তর বা স্থাপন। |
১১। | মেডিক্যাল রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট | স্বাস্থ্যসেবায় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং স্বাস্থ্যের ফলাফল উন্নত করতে চিকিৎসা গবেষণা, উদ্ভাবন এবং নতুন চিকিৎসা, ওষুধ এবং প্রযুক্তির উন্নয়নে বিনিয়োগ। |
১২। | সহযোগিতা এবং অ্যাডভোকেসি | সকলের জন্য স্বাস্থ্যসেবায় অধিগম্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গৃহীত নীতি এবং উদ্যোগের পক্ষে সমর্থন করার জন্য সরকারি সংস্থা, এনজিও, স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা এবং অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলির সাথে সহযোগিতা করা। |
৩। শিক্ষা ত্রাণ | ||
১। | শিক্ষা দান ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম | দরিদ্রজনগোষ্ঠীর ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে শিক্ষা দান এবং কর্মমুখী টেকনিক্যাল প্রশিক্ষণ প্রদান করা। |
২। | স্কুল নির্মাণ এবং অবকাঠামোর উন্নতি | সুবিধাবঞ্চিত বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অনুকূল শিক্ষার পরিবেশ প্রদানের জন্য স্কুল, শ্রেণীকক্ষ, লাইব্রেরি এবং অন্যান্য শিক্ষাগত সুবিধা তৈরি করা। |
৩। | শিক্ষা উপকরণ বিতরণ | অসমর্থ ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পাঠ্যপুস্তক, স্কুল সরবরাহ, ইউনিফর্ম এবং অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা। |
৪। | শিক্ষক প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি | শিক্ষকদের শিক্ষাদানের দক্ষতা, শিক্ষাগত জ্ঞান এবং শ্রেণীকক্ষ পরিচালনার কৌশলগুলিকে উন্নত করার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং কর্মশালা পরিচালনা করা। |
৫। | বৃত্তি এবং আর্থিক সহায়তা | দরিদ্র শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, অনুদান এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান। |
৬। | কমিউনিটি লার্নিং সেন্টার | দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পরিপূরক টিউটরিং, মেন্টরিং এবং একাডেমিক সাহায্য প্রদানের জন্য কমিউনিটি লার্নিং সেন্টার বা স্কুল-পরবর্তী প্রোগ্রাম প্রতিষ্ঠা করা। |
৭। | ডিজিটাল লিটারেসি প্রোগ্রাম | ছাত্র-ছাত্রী বা কমিউনিটির জন্য কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ এবং ডিজিটাল সাক্ষরতায় অধিগম্যতা নিশ্চিত গৃহীত যেকোনো কার্যক্রম। |
৮। | প্রারম্ভিক শৈশব শিক্ষা-উদ্যোগ | প্রাথমিক শৈশব শিক্ষা কার্যক্রম এবং প্রি-স্কুলগুলিকে যেকোনো প্রকারের সহায়তা। |
৯। | বিশেষ শিক্ষা সহায়তা | ভিন্নভাবে সক্ষম শিশুদের জন্য বিশেষভাবে গৃহীত যেকোনো শিক্ষামূলক পরিষেবা ও সম্পদের বিতরণ। |
১০। | শিক্ষাক্রম উন্নয়ন | শিক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং অংশীজনদের সাথে সাংস্কৃতিকভাবে প্রাসঙ্গিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পাঠ্যক্রম বিকাশের জন্য সহযোগিতা করা। |
১১। | গণসাক্ষরতা ও বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম | বয়স্কদের জন্য সাক্ষরতা ক্লাস, বয়স্ক শিক্ষা কোর্স এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম প্রদান করা। |
১২। | জরুরি পরিস্থিতিতে সংকট মোকাবেলার প্রশিক্ষণ | জরুরি অবস্থা, সংকট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত শিশু বা কমিউনিটিকে এ সকল অবস্থা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সম্পদ প্রদান করা। |
৪। সাধারণ গণ-উপযোগের উন্নতি বা প্রসার | ||
৪.১। জন-সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচী | ||
১। | তথ্য প্রচারণা অভিযান | গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যা, পরিবেশ দূষনজনিত উদ্বেগ, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও স্থানীয় সমাজের উন্নয়নমূলক কর্মসূচী সম্পর্কে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ। |
ব্রোশারস (brochures), পোস্টার (posters) এবং ফ্লাইয়ারের (flyers) মতো তথ্যমূলক সামগ্রী বিতরণের মধ্যমে জনসাধারণকে শিক্ষা এবং আচরণগত পরিবর্তনে উৎসাহিত করা। | ||
২। | কর্মশালা এবং সেমিনার | স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আর্থিক সাক্ষরতা, পরিবেশগত স্থায়িত্ব বজায় রাখা এবং নাগরিক সম্পৃক্ততার মতো বিষয়সমূহে কর্মশালা, সেমিনার এবং প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন। |
বিশেষজ্ঞ, পেশাদার এবং বিভিন্ন কমিউনিটির নেতৃবৃন্দদের আমন্ত্রণ জানানো, যাতে করে তারা অংশগ্রহণকারীদের সাথে জ্ঞান, দক্ষতা এবং স্ব স্ব বিভাগের সর্বোত্তম অনুশীলনসমূহ জানতে ও জানাতে পারেন। | ||
৩। | যোগাযোগ ও গণমাধ্যমের প্রসার | তথ্য প্রচার এবং জনসাধারণের সাথে জড়িত থাকার জন্য প্রচলিত গণমাধ্যম (টিভি, রেডিও, সংবাদপত্র) এবং আধুনিক/ডিজিটাল মাধ্যম (সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট, ব্লগ) ব্যবহার করা। |
আকর্ষণীয় বিষয়বস্তু, বৈচিত্র্যময় ভিডিও এবং তথ্যচিত্র তৈরি করে দর্শকদের কাছে মূল্যবান বার্তা পৌঁছে দেয়া এবং তাদের কর্মে উৎসাহিত করা। | ||
৪। | কমিউনিটি সংলাপ ও আলোচনা | উন্মুক্ত যোগাযোগ, সহযোগিতা, এবং স্থানীয় ইস্যুতে ঐকমত্য সৃষ্টির জন্য কমিউনিটি সংলাপ, গোলটেবিল আলোচনা, উঠান বৈঠক এবং টাউন হল সমাবেশ এর প্রসার করা। |
বিভিন্ন কমিউনিটির মানুষকে তাদের মতামত জানানো, অভিজ্ঞসতাসমূহ নিজেদের মাঝে ভাগ করে নেয়া এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়া। | ||
৫। | সামাজিক সমস্যাসমূহের সচেতনতামূলক প্রচারণা | বাল্যবিবাহ, পারিবারিক নির্যাতন, মাদকাসক্তি এবং মানসিক স্বাস্থ্যের বিকলাঙ্গতার মতো সামাজিক সমস্যাসমূহের ব্যপারে প্রচার-প্রচারনা, সেমিনার ও কমিউনিটি আলোচনার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। |
৪.২ দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচী | ||
১। | জীবিকা অর্জনে সহায়তাকরণ উদ্যোগ | বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্যোক্তা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে দারিদ্রসীমার মাঝে বসবাসকারী মানুষদের আয়ের স্থায়ী উৎস তৈরিতে এবং তাদের আর্থিক উন্নয়নের সম্ভাবনার বিকাশ করা। |
দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ছোট ব্যবসা আরম্ভ বা প্রসারিত করতে এবং তাদের পরিবারের আয় বৃদ্ধিতে সহায়তা করার জন্য ক্ষুদ্রঋণ প্রদান, বিভিন্ন সঞ্চয় গোষ্ঠীসমূহে অন্তর্ভুক্তি এবং আর্থিক সাক্ষরতার বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। | ||
২। | সমাজকল্যাণ পরিষেবা | অর্থনৈতিক সংকটাপন্ন পরিবার ও ব্যক্তিদের খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্য সেবা, বাসস্থানের সহায়তা এবং বস্ত্র বিতরণের মতো জরুরি সেবা প্রদান করা। |
সরকারি দপ্তর, এনজিও এবং কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনসমূহের সহযোগিতায় সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন চিহ্নিতকরণ এবং তা পূরণে উদ্যোগ গ্রহণ। | ||
৩। | শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ প্রদান | নিম্ন আয়ের পরিবারের সন্তান ও প্রাপ্তবয়স্কদের মানসম্মত শিক্ষা, সাক্ষরতা কর্মসূচী এবং শিক্ষা উপকরণের সুযোগ নিশ্চিত করতে শিক্ষা ও শিক্ষা অবকাঠামোতে বিনিয়োগ। |
অপেক্ষাকৃত সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণের সুযোগ গ্রহণে সহায়তা করতে বৃত্তি, অনুদান এবং মানসম্পন্ন পাঠদান নিশ্চিতকরণে সহায়তা প্রদান। | ||
৪। | কমিউনিটিসমূহের সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্প | দারিদ্রপীড়িত এলাকাসমূহের অবকাঠামো, স্বাস্থ্য সেবা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, পানি সরবরাহ এবং জনসেবা উন্নয়নের লক্ষ্যে কমিউনিটিভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন। |
উন্নয়নমূলক কর্মসূচির পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণে কমিউনিটিসমূহের সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে কর্মসূচিগুলোর প্রতিটি সদস্যদের অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা। | ||
৪.৩ নারীর ক্ষমতায়নে গৃহীত উদ্যোগ | ||
১। | লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরণে পৃষ্ঠপোষকতা | জনসচেতনতা অভিযান, নীতিগত সমর্থন ও আইনী সংস্কারের মধ্য দিয়ে লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরণে, নারীর অধিকার এবং সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠায় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান। |
লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরণ, নারী নির্যাতন এবং লিঙ্গ বৈষম্য প্রতিষ্ঠা করে প্রচলিত এমন ক্ষতিকারক সাংস্কৃতিক প্রথার বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি। | ||
২। | নারী নেতৃত্ব উন্নয়ন কার্যক্রম | নেতৃত্বের প্রশিক্ষণ, পরামর্শদান ও পরস্পরের প্রতি যোগাযোগ রক্ষার সুযোগ প্রদানের মাধ্যমে নারীদের দক্ষতা, আত্মবিশ্বাস এবং নিজ কমিউনিটি ও কর্মক্ষেত্রে নেতৃত্বের ভূমিকা পালনের ক্ষমতা বিকাশ করা। |
সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া, শাসন কাঠামো, এবং স্থানীয়, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বে নারীদের অংশগ্রহণের প্রচার ও প্রসার। | ||
৩। | জনসাধারণের সার্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি ও অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা নিশ্চিতকরণ | নারী উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের চাহিদা পূরণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন আর্থিক সেবা, ঋণ, সঞ্চয়ী হিসাব এবং বীমা পণ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। |
আয় উপার্জনকারী কর্মকাণ্ড, দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ এবং নারী-মালিকানাধীন উদ্যোগ ও সমবায় সমিতিগুলোকে সমর্থন করার মাধ্যমে নারীদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। | ||
৪। | স্বাস্থ্য ও প্রজনন অধিকার | নারীদের সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা, প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা, পরিবার পরিকল্পনা এবং মাতৃসেবা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি ও কল্যাণ নিশ্চিত করা। |
নারীদের প্রজনন অধিকার, জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের সুযোগ, এবং মাতৃমৃত্যু ও এইচআইভি/এইডসের মতো লিঙ্গভিত্তিক স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ব্যাপারে প্রচারণা বৃদ্ধি। | ||
৪.৪ গণতন্ত্র এবং সুশাসনের উদ্যোগ | ||
১। | ভোটার সচেতনতা এবং নাগরিক সম্পৃক্ততা | নাগরিকদেরকে তাদের ভোটাধিকার, নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণের গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করার জন্য ভোটার শিক্ষা প্রচারাভিযান পরিচালনা করা। |
ভোটার নিবন্ধন তথ্যভাণ্ডার, টাউন হল সভা এবং প্রার্থীদের আলোচনা সভা (ফোরাম) আয়োজনের মাধ্যমে ভোটদান ও নাগরিক অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করা। | ||
২। | স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রচার | সরকারি প্রতিষ্ঠান, জনগণের অর্থ ব্যবহার, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নিশ্চিতকরণের পক্ষে প্রচারণা। |
গণতান্ত্রিক নীতি এবং জনগণের আস্থার প্রতি আনুগত্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি কর্মকাণ্ড, বাজেট এবং নীতিগুলি পর্যবেক্ষণ করা। | ||
৩। | নাগরিক সমাজ সংস্থাসমূহের ক্ষমতা বৃদ্ধি | নাগরিক সমাজের সংগঠন, কমিউনিটি এবং তৃণমূল কর্মীদের প্রশিক্ষণ, সংস্থান এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করে তাদের সহযোগিতা, সাংগঠনিক দক্ষতা এবং নাগরিক অংশগ্রহণের প্রচেষ্টাকে সুদৃঢ় করা। |
জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বর্ধনের লক্ষ্যে পর্যবেক্ষক দল, অ্যাডভোকেসি জোট (advocacy coalitions) এবং নাগরিক পর্যবেক্ষণ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতায়নকে সমর্থন করা। | ||
৪। | স্থানীয় শাসনব্যবস্থার দৃঢ়ীকরণ | স্থানীয় সরকার, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ, ওয়ার্ড কাউন্সিলের দক্ষতা বৃদ্ধি করে কার্যকরভাবে জনসেবা প্রদান, নাগরিকদের সম্পৃক্ত করা এবং স্থানীয় চাহিদা পূরণ করা। |
স্থানীয় পর্যায়ে সকলের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠ শাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি, জনগোষ্ঠীসমূহের সাথে আলোচনা এবং নাগরিক পরিষদকে সহায়তা প্রদান করা। | ||
৪.৫ মানবাধিকার বিষয়ক প্রচার ও সচেতনতা বৃদ্ধি | ||
১। | সচেতনতা বৃদ্ধি অভিযান | মানবাধিকার, সমতা, এবং বৈষম্যহীনতার প্রচার এবং প্রশারের লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি অভিযান ও গনশিক্ষামূলক উদ্যোগ পরিচালনা করা। |
গণযোগাযোগমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং কমিনিটিসমূহের সচেতনতামূলক কর্মকান্ডের সহায়তায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়বস্তুসমূহ চিহ্নিতকরণ, জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি, এবং এ বিষয়ক আলোচনা ও উপলব্ধির উন্নয়ন। | ||
২। | আইনগত সহায়তা ও সেবা | মানবাধিকার লঙ্ঘন, বৈষম্য বা অবিচারের সম্মুখীন ব্যক্তি এবং কমিউনিটিসমূহের জন্য বিনামূল্যে আইনি সহায়তা, পরামর্শ এবং মামলাজনিত প্রতিনিধিত্ব প্রদান। |
মানবাধিকার রক্ষা, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং অপরাধীদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আইন সংস্কার, নীতি পরিবর্তন এবং বিদ্যমান আইন কঠোর প্রয়োগের পক্ষে সমর্থন প্রদান এবং প্রচার ও প্রসারে সহায়তা প্রদান। | ||
৩। | মানবাধিকার লঙ্ঘনের নথিপত্র সংরক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ | গবেষণা, নথি সংরক্ষণ ও প্রতিবেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন, বৈষম্যের ঘটনাবলির চিত্রায়ন এবং নাগরিক স্বাধীনতা লঙ্ঘনজনিত ঘটনাবলির নথিবদ্ধকরণ। |
মানবাধিকার পরিস্থিতি, পদ্ধতিগত অবিচার (systemic injustices) এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান সংরক্ষণে ব্যর্থতার বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলিকে পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদন জমা প্রদান। | ||
৪। | অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন | নারী, শিশু, নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু, শরণার্থী এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ অপেক্ষাকৃত দুর্বল ও প্রান্তিক গোষ্ঠীকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সোচ্চার হতে, সেবা গ্রহণে এবং বিভিন্ন বিষয়ে উক্ত জনগোষ্ঠী কর্তৃক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতায়ন করা। |
প্রান্তিক কমিউনিটির নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এবং সমাজে তাদের অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণ উন্নয়নে সহায়তা সেবাসহ আইনি সহায়তা এবং সমর্থন প্রদান করা। | ||
৪.৬ ধর্মনিরপেক্ষতা | ||
১। | ধর্মনিরপেক্ষ নীতি ও আইনের পক্ষে সমর্থন | ধর্মনিরপেক্ষতা এবং আইন, নীতি ও সংবিধানে ধর্মীয় স্বাধীনতা, বহুধর্মবাদ, ও সহনশীলতার সুরক্ষা নিশ্চিত করার পক্ষে সমর্থন প্রদান। |
২। | আন্তঃধর্মীয় সংলাপ এবং সহযোগিতা | শান্তি, সহাবস্থান, এবং সামাজিক সম্প্রীতি উন্নত করার জন্য বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পটভূমির জনগোষ্ঠীর মধ্যকার সংলাপ, সহযোগিতা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান। |
আন্তঃধর্মীয় অনুষ্ঠান, সম্মেলন ও ফোরাম আয়োজনের মাধ্যমে যৌথ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা, পরস্পরের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির সমন্বয় সাধন করা এবং বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধা জাগানো। | ||
৩। | চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার সুরক্ষা | মানুষের স্বাভাবিক বিবেক, বিশ্বাস, ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার রক্ষা করা, যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধর্মীয়, দার্শনিক, এবং মতাদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ ও প্রকাশের অধিকার। |
ধর্মীয় বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের ভিত্তিতে কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে বৈষম্য, নির্যাতন বা সহিংসতার বিরোধিতা করা এবং আইনের আশ্রয়ে তাদের সুরক্ষার পক্ষে সমর্থন জানানো। | ||
৪। | ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ এবং নীতির শিক্ষা | ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ, মানবতাবাদ, যুক্তিবাদ, সমালোচনামূলক চিন্তাধারা, প্রমাণ-ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, এবং ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থার গুরুত্ব বিষয়ে শিক্ষা ও গণমাধ্যমে আলোচনা উৎসাহিত করা। |
ধর্মীয় মতবাদ বা অনুশীলনের বাইরে, নৈতিকতা, নীতিশাস্ত্র এবং নাগরিক মূল্যবোধকে সমর্থন করে এমন ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষামূলক উদ্যোগ, ধর্মনিরপেক্ষ বিদ্যালয় এবং কর্মসূচি প্রণয়ন।
|
||
৪.৭ প্রান্তিক ও সুবিধাবঞ্চিত জনগণের ক্ষমতায়ন | ||
১। | সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম | সামাজিকভাবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে, কমিউনিটি পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন। |
সুবিধাবঞ্চিত এলাকাসমূহে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, স্যানিটেশন, এবং বিশুদ্ধ পানির মতো মৌলিক পরিষেবাগুলিতে নিশ্চিতকরণ। | ||
২। | জীবিকা ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ | প্রান্তিক ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান এবং আয়-উপার্জন ক্ষমতা বৃদ্ধিকরণে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, কাজের প্রস্তুতিমূলক কর্মসূচি এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচী প্রণয়ন। |
স্বাভাবিক ব্যক্তির ব্যবসা আরম্ভ করতে বা সম্প্রসারণে সহায়তা করার জন্য ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম ও ক্ষুদ্র ব্যবসাসমূহের ঋণ প্রাপ্তি সহজতর করা। | ||
৩। | আইনগত সহায়তা ও সেবা | সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আইনগত ক্ষেত্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বৈষম্য, নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আইনি সহায়তা, পরামর্শ ও মামলাসমূহে তাদের প্রতিনিধিত্বকরণ। |
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার জন্য নীতি পরিবর্তন, আইনি সংস্কার এবং বিদ্যমান আইন প্রয়োগের নিশ্চিত করার জন্য যাবতীয় কর্মসূচীর প্রচার ও প্রসার। | ||
৪। | স্বনির্ভরতা কার্যক্রম ও কর্মশালা | প্রান্তিক গোষ্ঠীর মাঝে আত্মবিশ্বাস, দৃঢ়তা, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা তৈরি করতে ক্ষমতায়ন কর্মশালা, সেমিনার, এবং নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আয়োজন করা। |
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর বলিষ্ঠকরণ ও স্বনির্ভরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সহকর্মী সহায়তা নেটওয়ার্ক, পরামর্শদাতা কর্মসূচি এবং কমিউনিটি সংগঠিত কর্মকাণ্ড সহজতরকরণ। | ||
৫। | সচেতনতামূলক প্রচারণা এবং শিক্ষা | সামাজিক অন্তর্ভুক্তি, বৈচিত্র্য এবং সহনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টিকারী অভিযান ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা। |
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার, সুযোগ-সুবিধা এবং সহায়ক অন্যান্য সুবিধার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাদের স্বার্থে কথা বলার ক্ষমতা ও সহায়তা সেবা প্রাপ্তির অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। | ||
৬। | জনগণের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও অধিকার আদায়ে সমর্থন | প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক প্রক্রিয়া, কমিউনিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং স্বার্থ সমর্থন কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা এবং তা সহজতর করা। |
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অভিব্যক্তি ও আকাঙ্ক্ষা জোরদার করার জন্য, তৃণমূল আন্দোলন, অ্যাডভোকেসি গ্রুপ এবং কমিউনিটি-ভিত্তিক সংগঠন গঠনে সহায়তা প্রদান। | ||
৪.৮ শিশু ও বয়ঃসন্ধিকালে উপনীত কিশোর-কিশোরীদের ক্ষমতায়ন | ||
১। | শিক্ষা লাভের সুযোগ ও অধিকার | শিক্ষাবৃত্তি, স্কুলের সরঞ্জামের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষামূলক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে বিশেষত সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতকরণ। |
প্রতিবন্ধী শিশু, সংখ্যালঘু এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় শিক্ষাগত প্রয়োজনীয়তা পূরণের লক্ষ্যে সকলের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি ও পদ্ধতির প্রতিষ্ঠা নিশ্চিতকরণ। | ||
২। | শিশু সুরক্ষা ও কল্যাণ | শিশু নির্যাতন, শোষণ, উপেক্ষা ও পাচার প্রতিরোধ এবং এই সমস্যাগুলি মোকাবেলায় শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা, হটলাইন এবং নিরাপদ আশ্রয় স্থাপন করা। |
নির্যাতন, সহিংসতা ও শোষণের শিকার শিশুদের পরামর্শদান, পুনর্বাসন ও তাদের সমাজে পুনঃঅন্তঃর্ভুক্তি সেবা প্রদান করা। | ||
৩। | কিশোর ও যুব নেতৃত্ব এবং দক্ষতার উন্নয়ন | নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ, জীবন দক্ষতা কর্মশালা ও পরামর্শদানের কার্যক্রমের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরী এবং যুবক-যুবতীদের সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের বাহক হিসেবে গড়ে তোলা। |
কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীদের নেতৃত্বে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও সামাজিক ন্যায়ের মতো বিষয় সম্পর্কিত উদ্যোগ, কমিউনিটি সেবা প্রকল্প এবং সচেতনতামূলক আন্দোলন তৈরিতে সহায়তা করা। | ||
৪। | স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও পুষ্টি সচেতনতা কর্মসূচি | শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সুস্থতা ও বিকাশের জন্য স্বাস্থ্য সেবা, পুষ্টি সহায়তা এবং প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করা। |
সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, রোগ প্রতিরোধ এবং সুস্থ জীবনযাপন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ইতিবাচক অভ্যাস ও আচরণ গড়ে তোলা। | ||
৫। | সাংস্কৃতিক ও বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড | শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সৃজনশীলতা, আত্মবিশ্বাস ও সামাজিক দক্ষতা বিকাশের জন্য শিল্পীসুলভ প্রতিভার প্রকাশ, সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রমের সুযোগ প্রদান করা। |
ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, শিল্পকলা প্রদর্শনী, সঙ্গীত কর্মশালা ও নাট্য মঞ্চনা করে দলগত মনোভাব, সহনশীলতা এবং স্ব-অভিব্যক্তি উন্নয়নে সহায়তা করা। | ||
৬। | শিশু অধিকার সচেতনতা ও অংশগ্রহণ
|
শিশুদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা বর্ধনের জন্য শিক্ষামূলক প্রচার, কর্মশালা এবং শিশু-কেন্দ্রিক উপকরণের ব্যবহার। |
সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া, কমিউনিটি উন্নয়নের উদ্যোগ ও নীতি সহায়ক কর্মকাণ্ডে কিশোর-কিশোরী ও শিশুদের সক্রিয় অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা। | ||
৪.৯ বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা | ||
১। | বয়স্কদের জন্য সেবাকেন্দ্র | বয়স্কদের জন্য কমিউনিটি সেন্টার বা ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন, সামাজিক কর্মকাণ্ড, বিনোদনমূলক কর্মসূচী এবং স্বাস্থ্য সেবা প্রদান। |
বয়স্কদের সামাজিক যোগাযোগ ও মানসিক সুস্থতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠান ও কর্মশালা আয়োজন। | ||
২। | বয়স্ক জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সমর্থন ও এ বিষয়ক পরামর্শ প্রদান | বয়স্ক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা, বাসস্থান, সামাজিক সুরক্ষা ও আইনগত অধিকার সংক্রান্ত বিশেষ প্রয়োজন ও উদ্বেগ মেটাতে পরামর্শ প্রদান। |
নিঃসঙ্গ, নির্যাতিত বা অবহেলিত বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নত করার লক্ষ্যে যাবতীয় সুযোগ সুবিধা সরবরাহ। | ||
৩। | বয়োজ্যেষ্ঠ ও তরুণদের মধ্যকার সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ কর্মসূচি | বয়োজ্যেষ্ঠ ও তরুণদের মধ্যকার সম্পর্ক সুদৃঢ়ীকরণ ও পারষ্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধি, পারস্পরিক সহায়তা ও অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রজন্মসমূহের অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মসূচি গড়ে তোলা। |
বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠীর জ্ঞান ও দক্ষতা তরুণ সমাজের সদস্যদের সাথে বিনিময়ের মাধ্যমে কার্যকরী উদ্যোগ বাস্তবায়ন। | ||
৪। | স্বাস্থ্য ও কল্যাণ কর্মসূচি | বয়স্কদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরীক্ষা, কল্যাণমূলক ক্লিনিক পরিষেবা এবং শরীরচর্চা কর্মসূচি পরিচালনা করা। |
বয়স্কদের সাধারণ স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলি প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিরক্ষামূলক স্বাস্থ্যসেবা, প্রতিষেধক এবং সহজতর রোগ নির্ণয় মাধ্যমের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণ। | ||
৫। | বয়স্ক স্বনির্ভরতা কার্যশালা | বয়স্কদের স্বাধীন ও সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আর্থিক সাক্ষরতা, ডিজিটাল সাক্ষরতা ও আইনগত অধিকার বিষয়ে কর্মশালা আয়োজন। |
প্রবীনদের সাথে নুতন প্রজন্মের মাঝে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহারের ফলে যে বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে তা দুরীকরণে ও তাদের অনলাইন মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা ও এর সাথে জড়িত যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ব্যবহারের সুযোগ নিশ্চিতকরণের স্বার্থে প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ প্রদান। | ||
৬। | পরিবহন পরিষেবা | বয়স্কদের চিকিৎসকের সাথে সাক্ষাৎ, সামাজিক অনুষ্ঠানে যাতায়াতের সুবিধা নিশ্চিত করতে পরিবহন সেবা চালু করা অথবা স্বেচ্ছাসেবক কার্যক্রম গড়ে তোলা। |
বয়স্কদের চলাচল সহজতর করার লক্ষ্যে বয়স্ক-বান্ধব গণপরিবহন ও অবকাঠামোর নির্মাণের পক্ষে জোড়ালো দাবি জানানো। | ||
৪.১০ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ | ||
১। | বিশেষ শিক্ষা কর্মসূচি | বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনন্য শিক্ষণগত প্রয়োজনীয়তা পূরণকল্পে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশেষায়িত শিক্ষা কার্যক্রম প্রদান করা। |
কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং জীবনযাপনের দক্ষতা বিকাশের মাধ্যমে তাদের আয় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাধীনতা ও সমাজে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণ। | ||
২। | কর্মসংস্থানের সুযোগ | কর্মসংস্থান সহায়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, কর্মজীবনের প্রশিক্ষণ ও নির্দেশনা এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ের সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। |
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক নিয়োগ পদ্ধতি এবং কর্মক্ষেত্রে সুবিধা প্রদানের পক্ষে ব্যাপক প্রচার ও প্রসার করা। | ||
৩। | সমাজে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের কর্মসূচি | বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজের বিভিন্ন স্তরে অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার জন্য তাদেরকে ঘিরে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা করা। |
কমিউনিটি-ভিত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে সখ্যতা, আত্মমর্যাদাবোধ এবং এই সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তাদের অনুভূতি গড়ে তোলা। | ||
৪। | অধিকার ও সমাজের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ | বুদ্ধিপ্রতিবন্ধকতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের অধিকার নিশ্চিত করা, যার মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান এবং কমিউনিটি সেবার অন্তর্ভুক্তি রয়েছে। |
বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সর্বাত্মকভাবে প্রতিটি স্তরে নাগরিক অধিকার ও সুযোগ-সুবিধায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সমন্বিত পরিবেশ ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রাধান্য দেয়া। | ||
৫। | পরিবার কল্যাণ সেবা | বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য পরামর্শ, অবকাশ যাপন সেবা এবং যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কিত তথ্য প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা সেবা প্রদান। |
পরিবারের সদস্যদের জন্য তাদের প্রিয় মানুষদের ব্যাক্তিগত চাহিদা আরও ভালভাবে বোঝার জন্য এবং তাদের বিকাশে সহায়তা করার উপায় সম্পর্কে প্রশিক্ষণের কর্মসূচি প্রদান করা। | ||
৬। | আইনগত ও অভিভাবকত্ব সহায়তা | অভিভাবকত্ব ব্যবস্থাপনা এবং আইনগত স্বীকৃতির সমর্থনসহ বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষায় আইনগত সহায়তা প্রদান। |
বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বাধীনতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা উন্নতির লক্ষ্যে আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠা করা। | ||
৭। | স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ ও সহায়তা প্রদান | বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়মিত চেকআপ এবং রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার উন্নয়নসহ সার্বিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ। |
বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিশেষ চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। | ||
৪.১১ শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন | ||
১। | অবকাঠামো উন্নয়ন এবং এর সুযোগের সহজলভ্যতা | সমাজের সকল স্তরে, ভবনে, পরিবহনে ও ডিজিটাল মাধ্যমগুলিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাহিদা পূরণের এবং এর সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে মান নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের পক্ষে সমর্থন প্রদান। |
নীতিনির্ধারক ও নগর পরিকল্পনাকারদের সহায়তায় সকলের জন্য অবাধ ও সহজলভ্য অন্তর্ভুক্তিমূলক অবকাঠামো ও পরিবেশ নির্মাণ। | ||
২। | সহায়ক উপকরণ ও প্রযুক্তি | শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বাধীনতা, গতিশীলতা এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার লক্ষ্যে সহায়ক উপকরন, গতিশীলতা সহায়ক সরঞ্জাম এবং অভিযোজিত (adaptive) প্রযুক্তিতে প্রবেশাধিকার প্রদান। |
প্রতিদিনের কার্যকলাপ, শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানে সহায়ক প্রযুক্তি কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে ব্যক্তিদের সহায়তা করার জন্য প্রশিক্ষণ ও সহায়ক সেবা প্রদান করা। | ||
৩। | শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন | শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বৈচিত্র্যপূর্ণ শিক্ষাগত চাহিদা পূরণ করে এমন অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষানীতি ও পদ্ধতি ত্বরান্বিতকরণ। |
বিশেষায়িত শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রদান করা যা শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের তাদের পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছাতে ও তাদের কর্মজীবনের আকাঙ্ক্ষাগুলিকে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম করে। | ||
৪। | কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা | শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সমান কর্মসংস্থানের সুযোগ, উপযোগী বাসস্থান এবং সহায়ক কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ নিশ্চিতকরণ। |
আর্থিক স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জনে সক্ষম হবার জন্য উদ্যোক্তা, স্বাবলম্বিতা এবং ক্ষুদ্র শিল্পের উন্নয়নে উৎসাহিত করা। | ||
৫। | ক্রীড়া, বিনোদনমূলক কার্যক্রম | শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সকল প্রকার ক্রীড়া ও বিনোদনমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা। |
শারীরিক সুস্থতা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং সহানুভূতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের উপযোগী ক্রীড়া অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা এবং বিনোদনমূলক ভ্রমণের আয়োজন। | ||
৪.১২ তৃতীয় লিঙ্গের ক্ষমতায়ন | ||
১। | সচেতনতা বৃদ্ধি ও সহায়তা কর্মসূচি | সমাজে তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের অবস্থানের ব্যাপারে সচেতনতা, গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি এবং অন্তর্ভুক্তি উন্নীত করতে সচেতনতা ও স্বাধীনতা চর্চা করা। |
মিডিয়া, কর্মশালা ও সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার, প্রতিবন্ধকতা এবং অবদান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি। | ||
২। | আইনগত অধিকার নিশ্চিতকরণ ও সহায়তা | তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কর্মসংস্থান এবং আবাসন অধিকার রক্ষায় আইনগত সহায়তা প্রদান। |
তৃতীয় লিঙ্গের আইনগত স্বীকৃতি এবং তাদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়নের পক্ষে সমর্থন প্রদান। | ||
৩। | স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সুযোগ ও সহায়ক সেবাসমূহ | তৃতীয় লিঙ্গের কমিউনিটির অনন্য চাহিদা পূরণের জন্য বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও সহায়তা গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা। |
৪। | শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ | লিঙ্গ পরিচয় ও প্রকাশের ভিত্তিতে বৈষম্যহীন কর্মস্থল নীতিমালা ও সমান কর্মসংস্থানের সুযোগের পক্ষে সমর্থন। |
তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহায়ক শিক্ষা ও পেশাগত প্রশিক্ষণ কর্মসূচীসমূহে অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি। | ||
৫। | সামাজিক ও কমিউনিটি সহায়তা | তৃতীয় লিঙ্গের কমিউনিটির ব্যক্তিদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল, সামাজিক কেন্দ্র এবং সহযোগী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, যেখানে তারা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে, অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারবে এবং সহকর্মীদের সমর্থন লাভ করতে পারবে। |
মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং বৈষম্য মোকাবেলায় তৃতীয় লিঙ্গের কমিউনিটি পরামর্শ, পর্যবেক্ষণ এবং সহকর্মী সহায়তা সেবা প্রদান করা। | ||
৪.১৩ সম অধিকার এবং সমান অংশগ্রহণ | ||
১। | সমাজের বিভেদ নিরসনে আন্দোলন | বয়স্ক, নারী, সংখ্যালঘু ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি বৈষম্য ও কুসংস্কারপূর্ণ আচরণের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচি গ্রহণ। |
সমাজের সর্বক্ষেত্রে সমান অংশগ্রহণ ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সম্মান, পরষ্পরের প্রতি বোঝাপড়া বৃদ্ধি এবং গ্রহণযোগ্যতার চর্চা গড়ে তোলা। | ||
২। | নীতি সংস্কার ও আইনগত সহায়তা | নীতি নির্ধারকদের সহযোগিতায় সকলের জন্য সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিতকারী অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। |
অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে এমন আইন ও নীতির বিরুদ্ধে আইনি সহায়তা প্রদান। | ||
৩। | সার্বজনীন রূপরেখা প্রণয়ন | সমাজের সকল বয়স ও সামর্থের মানুষের নাগরিক অধিকার নিশ্চিতকরণের প্রতিটি স্তরে, তাদের যাতায়াত ও ডিজিটাল ইন্টারফেস এ সার্বজনীন অধিগম্যতার রূপরেখা প্রণয়ন। |
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনসমূহের সহায়তায় বৈচিত্র্যময় চাহিদা পূরণে অন্তর্ভুক্তিকরণ পদ্ধতি প্রয়োগ। | ||
৪। | সামাজিক সম্পৃক্তি ও অংশগ্রহণ | সমাজের প্রতিটি স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় সমাজের সকল স্তরের মানুষের অন্তর্ভুক্তকরণকে উৎসাহিত করা। |
সামাজিক নীতিমালা ও উদ্যোগ গঠনে বৈচিত্র্যময় দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে উপদেষ্টা বোর্ড বা কমিটি গঠনের উৎসাহ প্রদান। | ||
৫। | জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি | প্রচলিত ধারণার বিলোপ সাধন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং অন্তর্ভুক্তি উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা। |
গণযোগাযোগ মাধ্যমের সহায়তায় বয়স্ক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ইতিবাচক গল্প ও চিত্রায়ন উপস্থাপন করার মাধ্যমে সমাজে তাদের প্রতি প্রচলিত নেতিবাচক ধারণাগুলির বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা। | ||
৪.১৪ সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন | ||
১। | শিক্ষা ও কর্মদক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচী | সামাজিক-অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক অবস্থান বা অন্যান্য কারণে সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচীতে প্রবেশাধিকার প্রদান। |
সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর শিক্ষাগত ও কর্মজীবন উন্নয়নের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে বৃত্তি, শিক্ষা সহায়তা এবং পরামর্শদানমূলক কর্মসূচী গ্রহণ করা। | ||
২। | উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও আর্থিক সাক্ষরতা | অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন, ক্ষুদ্র ব্যবসা আরম্ভ এবং তাদের অর্থ ব্যবস্থাপনার ক্ষমতা অর্জনে সহায়ক আর্থিক সাক্ষরতা কর্মশালা, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ এবং ক্ষুদ্রঋণ উদ্যোগ গ্রহণ। |
সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠির চাহিদা অনুযায়ী গঠিত ক্ষুদ্রঋণ, সঞ্চয় হিসাব এবং আর্থিক সেবা গ্রহণের সুযোগ প্রদান করা। | ||
৩। | স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ ও সহায়তা প্রদান | সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের বিশেষ প্রয়োজন অনুযায়ী সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা, প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা, অন্যান্য সহায়ক সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। |
বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী, কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠন এবং সরকারী সংস্থার সহযোগিতায় সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যের বৈষম্য মোকাবেলা এবং এর উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ। | ||
৪। | সামাজিক উন্নয়ন এবং সহায়ক কর্মসূচী গ্রহণ | নির্দিষ্ট প্রয়োজন পূরণকল্পে ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা নিরসনে সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ, যার মধ্যে বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন, আবাসন এবং অবকাঠামোগত উন্নতি সাধন অন্তর্ভুক্ত। |
প্রান্তিক জনগোষ্ঠির জন্য সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং প্রক্রিয়াগত বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে নীতিগত পরিবর্তন, সামাজিক সংস্কার এবং সম্পদ ও উপকরন সুষম বন্টন নিশ্চিতকরণ। | ||
৫। | সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রচার | সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যসমূহের উদযাপন এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মাঝে আদিবাসী ভাষা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি। |
সংস্কৃতি বিনিময় কর্মসূচী, শিল্পকলা প্রদর্শনী এবং গল্পকথনের আসরের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত কমিউনিটির সমৃদ্ধি ও বৈচিত্র্য ফুটিয়ে তোলা। | ||
৪.১৫ সামাজিক কর্মকাণ্ড | ||
১। | সামাজিক বা কমিউনিটি উন্নয়ন কর্মসূচী | সামাজিক ঐক্য বৃদ্ধি, সামাজিক চাহিদা পূরণ এবং নিজেদের এ সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে অনুভূত হবার লক্ষ্যে গৃহীত উদ্যোগ। |
২। | কমিউনিটি কেন্দ্র | সামাজিক সেবা, শিক্ষা উপকরণ নিশ্চিতকরণ ও বিনোদন সুবিধা প্রদানকারী কেন্দ্র স্থাপন। |
৩। | প্রতিবেশীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ কর্মসূচী | প্রতিবেশীদের মধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা, অপরাধ ঠেকানো এবং একে অপরের প্রতি বিশ্বাস গড়ে তোলা। |
৪। | সামাজিক বাগান ও বনায়ন | কমিউনিটিভিত্তিক বাগানের স্থান সৃজন, স্থায়িত্ব বর্ধন এবং উক্ত কমিউনিটির সহযোগিতা বৃদ্ধি। |
৫। | যুব উন্নয়ন কর্মসূচি | তরুণদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক বিকাশ ত্বরান্বিত করার জন্য পরামর্শদান, নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বর্ধনের কর্মসূচি গ্রহণ। |
৬। | প্রবীণ সহায়তা সেবা | প্রবীণ নাগরিকদের সুস্থতা ও সামাজিক যোগাযোগ উন্নত করার লক্ষ্যে সহায়তা, সঙ্গ প্রদান এবং বিনোদনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা। |
৭। | সংকট নিরসন সেবা | মানসিক সমস্যা বা জরুরী পরিস্থিতিতে উপনিত ব্যক্তি ও পরিবারকে সহায়তা, পরামর্শ এবং যাবতীয় উপকরণ সরবরাহ। |
৮। | দুর্যোগ পূর্ব-প্রস্তুতি ও মোকাবিলা | প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জরুরী পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ, ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয় এবং সহায়তা প্রদান। |
৯। | আন্তঃধর্মীয় সংলাপ উদ্যোগ | বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যকার সৌহার্দ্য, সহনশীলতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি। |
১০। | কমিউনিটি-ভিত্তিক পুনর্বাসন কর্মসূচী | মাদকাসক্তি, মানসিক আঘাত (ট্রমা) ও অন্যান্য সমস্যা হতে সুস্থতা অর্জনের লক্ষ্যে পুনর্বাসন সেবা প্রদান ও সহায়ক গোষ্ঠীর মাধ্যমে সহায়তার ব্যাবস্থা করা। |
৪.১৬ সাংস্কৃতিক কার্যক্রম | ||
১। | সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ প্রকল্প | ঐতিহ্যগত শিল্প, কারুশিল্প, সঙ্গীত, নৃত্য, এবং লোককাহিনীর নথিকরণ, প্রচার এবং সংরক্ষণ। |
২। | সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি | বিনিময় কর্মসূচি, উৎসব এবং অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্তঃ-সাংস্কৃতিক কথোপকথন, বোঝাপড়া এবং উপলব্ধি সহজতর করা। |
৩। | ভাষা পুনরুজ্জীবন প্রচেষ্টা | বিপন্ন ভাষা এবং ভাষাগত ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত ও সংরক্ষণের জন্য সহায়ক উদ্যোগ। |
৪। | জাতিগত ঐতিহ্য উদযাপন | বিভিন্ন জাতি সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ঐতিহ্য উদযাপন করে এমন অনুষ্ঠান এবং উৎসব আয়োজন করা। |
৫। | শিল্প ও কারুশিল্প কর্মশালা | সম্প্রদায়ের সদস্যদের ঐতিহ্যগত শিল্প ও কারুশিল্পের কৌশল শেখানোর জন্য কর্মশালা, ক্লাস এবং প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা। |
৬। | সাংস্কৃতিক সচেতনতা প্রচারাভিযান | শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, এবং মিডিয়া প্রচারাভিযানের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা, অন্তর্ভুক্তি এবং বৈচিত্র্য প্রচার করা। |
৭। | ঐতিহাসিক সংরক্ষণ প্রকল্প | সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং পরিচয় প্রচারের জন্য ঐতিহাসিক স্থান, ল্যান্ডমার্ক এবং স্মৃতিস্তম্ভ পুনরুদ্ধার ও রক্ষণাবেক্ষণ।
|
৪.১৭ অর্থনৈতিক কার্যক্রম | ||
১। | ক্ষুদ্রঋণ এবং উদ্যোক্তা কর্মসূচি | আগ্রহী উদ্যোক্তা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসার মালিকদের ক্ষুদ্র ঋণ, ব্যবসায়িক প্রশিক্ষণ, এবং সহায়তা প্রদান করা। |
২। | চাকরির দক্ষতা প্রশিক্ষণের উদ্যোগ | কর্মসংস্থান এবং চাকরির সম্ভাবনা বাড়ানোর জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, চাকরির প্রস্তুতি কর্মশালা, এবং দক্ষতা-নির্মাণ কর্মসূচী প্রদান করা। |
৩। | আর্থিক সাক্ষরতা শিক্ষা | ব্যক্তি এবং পরিবারকে বাজেট, সঞ্চয়, বিনিয়োগ এবং ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থা কার্যকরভাবে পরিচালনার বিষয়ে শিক্ষিত করা। |
৪। | কমিউনিটি ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট | স্থানীয় ব্যবসাকে সহায়তা করা, অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা প্রচার করা এবং কমিউনিটির মধ্যে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। |
৫। | ন্যায্য বাণিজ্য এবং নৈতিক খরচ উদ্যোগ | ন্যায্য শ্রম অনুশীলন, পরিবেশগত স্থায়িত্ব, এবং উৎপাদন এবং ব্যবহারে সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রচার। |
৬। | সমবায় উদ্যোগ এবং কমিউনিটি মালিকানাধীন ব্যবসা | কমিউনিটির ক্ষমতায়ন এবং অর্থনৈতিক ন্যায্যতা উন্নীত করার জন্য সমবায় এবং যৌথ উদ্যোগ প্রতিষ্ঠার সুবিধা প্রদান। |
৭। | সামাজিক প্রভাব বিনিয়োগ | আর্থিক আয়ের পাশাপাশি ইতিবাচক সামাজিক এবং পরিবেশগত ফলাফল তৈরি করে এমন প্রকল্প এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করা। |
৪.১৮ শিক্ষামূলক কার্যক্রম | ||
১। | বয়স্ক সাক্ষরতা কর্মসূচি | প্রাপ্তবয়স্কদের পড়াশুনা, লেখা এবং সংখ্যার দক্ষতা উন্নত করতে তাদের জন্য সাক্ষরতা ক্লাস, টিউটরিং এবং শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা। |
২। | স্কুল সাপোর্ট ইনিশিয়েটিভস | শিক্ষাগত কর্মক্ষমতা এবং সাফল্য বৃদ্ধির জন্য শিক্ষার্থীকে পরামর্শ, টিউটরিং এবং শিক্ষাগত সহায়তা প্রদান করা। |
৩। | STEM শিক্ষা কার্যক্রম | হ্যান্ডস-অন লার্নিং এবং সমৃদ্ধ কার্যক্রমের মাধ্যমে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, এবং গণিত (STEM) বিষয়ে আগ্রহ সৃষ্টি এবং দক্ষতার প্রচার করা। |
৪। | গার্লস সাপোর্ট ইনিশিয়েটিভস | মেয়েদের মানসম্পন্ন শিক্ষায় প্রবেশাধিকার, শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ এবং স্কুল ও সম্প্রদাইয়ে/কমিউনিটিতে লিঙ্গ সমতাকে সমর্থন করা। |
৫। | শিক্ষা অ্যাডভোকেসি এবং নীতি সংস্কার | স্থানীয় জাতীয় এবং বৈশ্বিক স্তরে শিক্ষার ন্যায়সঙ্গত প্রবেশ, মানসম্পন্ন শিক্ষার মান এবং শিক্ষা নীতি সংস্কারের পক্ষে সমর্থন করা। |
৬। | শিক্ষামূলক সম্পদ কেন্দ্র | শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য শিক্ষা উপকরণ, প্রযুক্তি অধিগম্যতা (technology access) এবং টিউটরিং পরিষেবা প্রদানকারী কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা। |
৭। | স্কুল-পরবর্তী সমৃদ্ধকরণ প্রোগ্রাম | নিয়মিত স্কুল সময়ের বাইরে শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যক্রম বহির্ভূত কার্যকলাপ, হোমওয়ার্ক সহায়তা এবং সমৃদ্ধকরণ প্রোগ্রাম প্রদান করা। |
৪.১৯ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম | ||
১। | মেডিকেল ক্যাম্প | পরামর্শ, স্ক্রীনিং এবং প্রাথমিক চিকিৎসাসহ বিনামূল্যে বা কম খরচে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা। |
২। | মোবাইল হেলথ ক্লিনিক | চিকিৎসা সেবা, টিকাদান এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদানের জন্য গ্রামীণ বা প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীতে মোবাইল হেলথ ইউনিট স্থাপন করা। |
৩। | স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম | প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, স্বাস্থ্যবিধি, এবং রোগ ব্যবস্থাপনার মতো বিষয়গুলিতে কর্মশালা, সেমিনার এবং সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান পরিচালনা করা। |
৪। | মা ও শিশু স্বাস্থ্য উদ্যোগ | মা ও শিশু স্বাস্থ্যের ফলাফল উন্নত করার জন্য প্রসবপূর্ব যত্ন, মাতৃস্বাস্থ্য পরিষেবা, শিশুর যত্ন এবং টিকা প্রদান করা। |
৫। | দীর্ঘস্থায়ী রোগ ব্যবস্থাপনা | ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং এইচআইভি/এইডস-এর মতো দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সহায়তা গোষ্ঠী, কাউন্সেলিং এবং সংস্থান সরবরাহ করা। |
৬। | মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা পরিষেবা | মানসিক স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ, স্ট্রেস বা ট্রমা সম্মুখীন ব্যক্তিদের কাউন্সেলিং, থেরাপি, এবং মানসিক স্বাস্থ্য সংস্থান প্রদান করা। |
৭। | হোম হেলথ কেয়ার ভিজিট | হোমবাউন্ড রোগী এবং বয়স্কদের জন্য চিকিৎসা সেবা, পর্যবেক্ষণ, এবং সহায়তা প্রদানের জন্য পেশাদার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের দ্বারা হোম ভিজিটের ব্যবস্থা করা। |
৮। | স্বাস্থ্য স্ক্রীনিং প্রোগ্রাম | প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং হস্তক্ষেপের সুবিধার্থে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার এবং দৃষ্টি/শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার মতো অবস্থার জন্য স্বাস্থ্য স্ক্রীনিংয়ের আয়োজন করা। |
৪.২০ বিশুদ্ধ পানি কার্যক্রম | ||
১। | পানি বিশুদ্ধকরণ প্রকল্প | নিরাপদ এবং বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করার জন্য পানি পরিশোধন ব্যবস্থা, ফিল্টার এবং ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা। |
২। | কমিউনিটি কূপ এবং পানির উৎস | পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ছাড়াই কমিউনিটির জন্য বিশুদ্ধ পানি প্রদানের জন্য কূপ, বোরহোল এবং কমিউনিটি পানির উৎস খনন করা। |
৩। | পানির গুণমান পরীক্ষা | পানির গুণমান মূল্যায়ন, দূষক সনাক্তকরণ এবং সুরক্ষা মান নিশ্চিত করতে পানির উৎসগুলির নিয়মিত পরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করা। |
৪। | পানি বিতরণ কর্মসূচি | পরিবার, স্কুল এবং স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলিতে বিশুদ্ধ পানি পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিতরণ নেটওয়ার্ক এবং পাইপলাইন স্থাপন করা। |
৫। | পানি সংরক্ষণ শিক্ষা | শিক্ষামূলক প্রচারাভিযান এবং কমিউনিটির প্রচারের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণের অনুশীলন, বৃষ্টির পানি সংগ্রহ, এবং সঠিকভাবে পানি ব্যবহারের প্রচার। |
৬। | জরুরী পানি সরবরাহ | প্রাকৃতিক দুর্যোগ, জরুরী অবস্থা এবং মানবিক সংকটের সময় জরুরী পানি সরবরাহ এবং পরিশোধন কিট প্রদান করা। |
৭। | স্বাস্থ্যবিধি প্রচার | সঠিক স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য বিশুদ্ধ পানির গুরুত্ব সম্পর্কে কমিউনিটিকে শিক্ষিত করা। |
৮। | পানির অবকাঠামো উন্নয়ন | পানির নিশ্চয়তা এবং নির্ভরযোগ্যতা উন্নত করতে পানির অবকাঠামো, জলাধার, এবং স্টোরেজ সুবিধাগুলির নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণে বিনিয়োগ করা। |
৪.২১ স্যুয়ারেজ সিস্টেম কার্যক্রম | ||
১। | স্যানিটেশন অবকাঠামো প্রকল্প | বর্জ্য পানি ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধের জন্য পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, এবং স্যানিটেশন সুবিধা নির্মাণ ও আপগ্রেড করা। |
২। | কমিউনিটি ল্যাট্রিন নির্মাণ | যথাযথ স্যানিটেশন অবকাঠামো নেই এমন এলাকায় পাবলিক ল্যাট্রিন, টয়লেট এবং স্যানিটেশন সুবিধা নির্মাণ। |
৩। | সেপটিক ট্যাংক ইনস্টলেশন | নিরাপদে মানুষের বর্জ্য নিষ্পত্তি এবং ভূগর্ভস্থ পানি দূষণ রোধ করতে গ্রামীণ এবং শহরের পাশের এলাকায় সেপটিক ট্যাংক এবং বর্জ্য পানি চিকিৎসা ব্যবস্থা স্থাপন করা। |
৪। | বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি | কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পরিবেশ দূষণ কমাতে বর্জ্য সংগ্রহ, পুনর্ব্যবহার এবং নিষ্পত্তি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা। |
৫। | স্বাস্থ্যবিধি এবং স্যানিটেশন শিক্ষা | সঠিক স্যানিটেশন অনুশীলন এবং রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্যবিধি প্রচার প্রচারণা, কর্মশালা এবং প্রদর্শনী পরিচালনা করা। |
৬। | পয়ঃনিষ্কাশন রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামত | কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং স্যানিটেশন অবকাঠামোর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ, পরিষ্কার এবং মেরামত করা। |
৭। | কমিউনিটি ক্লিন-আপ ক্যাম্পেইন | পরিবেশগত পরিচ্ছন্নতা ও স্যানিটেশন উন্নত করতে ক্লিন-আপ ড্রাইভ, বর্জ্য অপসারণ ইভেন্ট এবং কমিউনিটি বিউটিফিকেশন প্রকল্পের আয়োজন করা। |
৮। | জনস্বাস্থ্য সমর্থনে পদক্ষেপ | জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশগত স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য উন্নত স্যানিটেশন নীতি, প্রতিবিধান এবং বিনিয়োগের জন্য সমর্থন করা। |
৪.২২ সাধারণ ত্রাণ কার্যক্রম | ||
১। | ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিম | ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, এবং হারিকেনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদানের জন্য প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক এবং সংস্থানগুলিকে একত্রিত করা। |
২। | দুর্যোগ ত্রাণ সরবরাহ | ক্ষতিগ্রস্থ কমিউনিটির জন্য খাদ্য, পানি, আশ্রয় সামগ্রী, কম্বল, পোশাক এবং চিকিৎসা সরবরাহ সহ প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহ সংগ্রহ এবং বিতরণ। |
৩। | অনুসন্ধান এবং উদ্ধার অভিযান | দুর্যোগ-কবলিত এলাকায় আটকে পড়া বা আহত ব্যক্তিদের সনাক্ত ও সরিয়ে নেওয়ার জন্য অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা। |
৪। | চিকিৎসা সহায়তা | দুর্যোগে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের জরুরী চিকিৎসা সেবা, ট্রিয়াজ (triage) এবং চিকিৎসা প্রদানের জন্য মেডিকেল টিম, মোবাইল ক্লিনিক এবং ফিল্ড হাসপাতাল মোতায়েন করা। |
৫। | সাইকো-সোশাল সাপোর্ট | মানসিক চাপ এবং ট্রমা মোকাবেলায় সহায়তার জন্য দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এবং পরিবারকে কাউন্সেলিং, মানসিক সমর্থন এবং ট্রমা কাউন্সেলিং প্রদান করা। |
৬। | অস্থায়ী আশ্রয় | বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর জন্য নিরাপদ বাসস্থান এবং মৌলিক সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র, শরণার্থী শিবির এবং উচ্ছেদ কেন্দ্র স্থাপন করা। |
৭। | লজিস্টিকস এবং ট্রান্সপোর্টেশন | ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সময়মত ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সরবরাহ, পরিবহন এবং বিতরণ নেটওয়ার্ক সমন্বয় করা। |
৮। | তথ্য এবং যোগাযোগ | রেডিও, টেলিভিশন, সোশ্যাল মিডিয়া ও কমিউনিটি সম্পৃক্ততা বা আউটরিচের মতো যোগাযোগের চ্যানেলের মাধ্যমে দুর্যোগ পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য, সতর্কতা এবং আপডেট প্রচার করা। |
৪.২৩ পুনর্বাসন কার্যক্রম | ||
১। | কমিউনিটি পুনর্নির্মাণ | অবকাঠামো, বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতাল এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হওয়া পাবলিক সুবিধাগুলির পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনের সুবিধা প্রদান। |
২। | জীবিকা সহায়তা কর্মসূচি | দুর্যোগ-আক্রান্ত ব্যক্তি এবং কমিউনিটিকে তাদের জীবিকা পুনর্গঠনে সাহায্য করার জন্য আয়-উপার্জনমূলক কার্যক্রম, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং চাকরির নিয়োগ পরিষেবা বাস্তবায়ন করা। |
৩। | মনোসামাজিক পুনর্বাসন | দুর্ঘটনায় বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের ট্রমা থেকে পুনরুদ্ধার করতে এবং তাদের জীবন পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য দীর্ঘমেয়াদী কাউন্সেলিং, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা, এবং মনোসামাজিক পুনর্বাসন পরিষেবা প্রদান করা। |
৪। | শিক্ষা পুনরুদ্ধার | শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা পুনরুদ্ধার ও পুননির্মান, স্কুল সরবরাহ প্রদান এবং শিক্ষার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত শিশু ও শিক্ষকদের মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা প্রদান। |
৫। | স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা পুনরুদ্ধার | স্বাস্থ্যসেবা সুবিধার পুনর্বাসন, চিকিৎসা সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা এবং স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা যাতে দুর্যোগ-আক্রান্ত এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলি পুনরুদ্ধার করা যায় এবং উন্নত করা যায়। |
৬। | কমিউনিটির সহনশীলতা (resilience) তৈরি | সহনশীলতা এবং রেসপন্স করার ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য দুর্যোগ প্রস্তুতি প্রশিক্ষণ, ঝুঁকি হ্রাস কর্মশালা এবং কমিউনিটি ভিত্তিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি পরিচালনা করা। |
৭। | পরিবেশ পুনরুদ্ধার | দুর্যোগের কারণে পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবং দীর্ঘমেয়াদী স্থায়িত্ব নিশ্চিতকল্পে পরিবেশগত পরিচ্ছন্নতা, পুনঃবনায়ন ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প গ্রহণ করা। |
৮। | নীতি অ্যাডভোকেসি ও সংস্কার | দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস, জলবায়ু সহনশীলতা এবং দুর্বল সম্প্রদায়ের জন্য ন্যায়সঙ্গত পুনরুদ্ধারকে অগ্রাধিকার দেয় এমন নীতি, বিধি-বিধান ও বিনিয়োগকে সমর্থন করা। |
৪.২৪ কৃষি কার্যক্রম | ||
১। | কৃষক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী | কৃষি চর্চা, শস্য ব্যবস্থাপনা ও পশুপালনের উন্নতির জন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা, প্রদর্শনী এবং সম্প্রসারণ পরিষেবা প্রদান করা। |
২। | বীজ বিতরণ উদ্যোগ | ফসলের ফলন বাড়াতে, ফসলের জাত উন্নত করতে এবং কৃষি বৈচিত্র্যকে উন্নীত করার জন্য কৃষকদের উচ্চ মানের বীজ, চারা এবং রোপণ সামগ্রী বিতরণ করা। |
৩। | মৃত্তিকা সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা | মাটির উর্বরতা রক্ষা এবং অবক্ষয় রোধ করার জন্য মৃত্তিকা সংরক্ষণের কৌশল, ক্ষয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা। |
৪। | পানি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা | পানি-সঞ্চয় সেচ পদ্ধতি, বৃষ্টির জল সংগ্রহের কৌশল, এবং জলের ব্যবহারকে অপ্টিমাইজ করতে এবং ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করার জন্য দক্ষ পানি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা প্রবর্তন। |
৫। | জৈব চাষ প্রচার | রাসায়নিক ইনপুট কমাতে, মাটির স্বাস্থ্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশগত স্থায়িত্বকে উন্নত করতে জৈব চাষ পদ্ধতি, কম্পোস্টিং, এবং প্রাকৃতিক কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ কৌশল প্রচার করা। |
৬। | প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কর্মসূচী | পশুসম্পদ স্বাস্থ্য, উৎপাদনশীলতা, এবং কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্য ছোট আকারের পশুপালন, পশুপালন চর্চা এবং পশুচিকিৎসা সেবাকে সহায়তা করা। |
৭। | বাজার সংযোগ এবং মূল্যশৃঙ্খল | বাজার অধিগম্যতা সহজতর করা, বাজারের তথ্য ব্যবস্থার উন্নতি করা এবং কৃষকদের ক্রেতাদের সাথে সংযুক্ত করতে এবং বাজারের সুযোগ বৃদ্ধি করতে কৃষি ভ্যালু চেইন (value chain) শক্তিশালী করা। |
৮। | কৃষক সমবায় | কৃষকদের ক্ষমতায়ন, ন্যায্য মূল্যের দরকষাকষি, সামষ্টিক পরিসম্পদ ও পরিষেবাগুলো সহজলভ্য করার জন্য কৃষক সমবায়, উৎপাদক গোষ্ঠী এবং কৃষি সমিতি প্রতিষ্ঠা করা। |
৯। | জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি | জলবায়ু-সহনশীল ফসলের জাত, খরা-সহনশীল বীজ, এবং কৃষকদের জলবায়ু ঝুঁকি প্রশমিত করতে এবং পরিবর্তিত পরিবেশগত অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করার জন্য অভিযোজিত চাষ পদ্ধতির প্রচার। |
১০। | কৃষি-বনায়ন উদ্যোগ | জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধি, মাটির স্বাস্থ্যের উন্নতি ও কৃষকদের আয়ের উৎসকে বৈচিত্র্যময় করার জন্য কৃষি-বনায়ন ব্যবস্থা, বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি এবং বন সংরক্ষণ প্রকল্প প্রবর্তন করা। |
১১। | গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন | গ্রামীণ রাস্তা, সেচ নেটওয়ার্ক, স্টোরেজ সুবিধা ও ফসল-পরবর্তী অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করা যাতে বাজারে অধিগম্যতা বৃদ্ধি করা যায়, ফসল কাটার পরে লোকসান কমানো যায় এবং কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়ানো যায়। |
১২। | গবেষণা ও উন্নয়ন | উদ্ভাবনী কৃষি প্রযুক্তি, ফসলের জাত, এবং স্থানীয় কৃষি অবস্থার সাথে মানানসই উত্তম চর্চাগুলো বিকাশের জন্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সম্প্রসারণ পরিষেবাগুলিকে সহায়তা করা। |
৪.২৫ কৃষি উন্নয়ন কার্যক্রম | ||
১। | কৃষকের মাঠ স্কুল | মাঠ স্কুল প্রতিষ্ঠা করা যেখানে কৃষকরা ব্যবহারিক কৃষি দক্ষতা শিখতে পারে, জ্ঞান বিনিময় করতে পারে এবং হাতে-কলমে প্রদর্শন এবং পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে। |
২। | ক্ষুদ্রঋণ এবং ঋণ পরিষেবা | স্বল্প উপার্জনকারী কৃষকদের কৃষি উপকরণ, সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করার জন্য ঋণ, ক্ষুদ্রঋণ এবং আর্থিক পরিষেবাগুলো সহজলভ্য করা। |
৩। | কৃষি কর্মসূচীতে নারী | প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারী কৃষকদের ক্ষমতায়ন, সম্পদে অধিগম্যতা, এবং নেতৃত্বের সুযোগের মাধ্যমে কৃষি কর্মকাণ্ডে তাদের অংশগ্রহণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করা। |
৪। | কৃষিতে যুব সম্পৃক্ততা | বয়স্ক-কৃষক জনগোষ্ঠীর পরিবর্তে তরুণ কৃষক তৈরীতে এবং টেকসই চাষাবাদের চর্চাকে পরবর্তি ধাপে উন্নীত করার জন্য শিক্ষা, উদ্যোক্তা প্রোগ্রাম এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষিতে যুবকদের সম্পৃক্ততাকে উৎসাহিত করা। |
৫। | ফার্ম-টু-মার্কেট উদ্যোগ | সরবরাহ শৃঙ্খল সংক্ষিপ্ত করতে, কৃষকদের আয় বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের খাদ্য অধিগম্যতার প্রসারে সরাসরি বিক্রয়, কৃষকদের বাজার এবং মূল্য সংযোজন প্রক্রিয়াকরণ সুবিধার প্রচার। |
৬। | খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি কর্মসূচী | কৃষি বৈচিত্র্যকরণ, পুষ্টি শিক্ষা ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার উন্নতি, সুষম খাদ্যের প্রচার এবং অপুষ্টি মোকাবেলায় সহায়তামূলক উদ্যোগ। |
৭। | কৃষি সম্প্রসারণ পরিষেবা এবং জ্ঞান হস্তান্তর | কৃষকদের কাছে উত্তম চর্চা, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং কৃষি তথ্য প্রচারের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ পরিষেবা, কৃষক থেকে কৃষক নেটওয়ার্ক এবং নলেজ শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলিকে শক্তিশালী করা। |
৪.২৬অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম | ||
১। | রাস্তা নির্মাণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ | যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে এবং পণ্য ও মানুষের পরিবহনের সুবিধার্থে নতুন রাস্তা ও মহাসড়ক নির্মাণ। |
পরিবহন নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা এবং দক্ষতা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান রাস্তাগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত। | ||
২। | সেতু নির্মাণ ও পুনর্বাসন | গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে অধিগম্যতা এবং সংযোগ বাড়াতে নতুন সেতু নির্মাণ এবং বিদ্যমান সেতুগুলি মেরামত করা। |
নদী, জলপ্রবাহ এবং উপত্যকার উপর সেতু নির্মাণ এবং যাতায়াতের সুবিধার্থে এবং প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি উন্নত করা। | ||
৩। | পাবলিক ট্রান্সপোর্টেশন উদ্যোগ | শহরাঞ্চলে যানজট ও দূষণ কমাতে বাস, ট্রেন, ট্রাম এবং মেট্রোসহ গণপরিবহন ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ও সম্প্রসারণ করা। |
উদ্ভাবনী পরিবহন সমাধান যেমন বাইক-শেয়ারিং প্রোগ্রাম, কারপুলিং উদ্যোগ, এবং বৈদ্যুতিক যানবাহন অবকাঠামো প্রবর্তন। | ||
৪। | পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন প্রকল্প | কমিউনিটিগুলিতে বিশুদ্ধ এবং নিরাপদ পানি সরবরাহ করার জন্য পানি সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন এবং আপগ্রেড করা। |
স্যানিটেশন উন্নত করতে এবং পরিবেশ দূষণ রোধ করতে পয়ঃনিষ্কাশন শোধনাগার এবং বর্জ্য পানি ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা নির্মাণ। | ||
৫। | বিদ্যুৎ অবকাঠামো উন্নয়ন | গৃহস্থালি, ব্যবসা এবং জনসাধারণের সুবিধার জন্য নির্ভরযোগ্য এবং সাশ্রয়ী মূল্যের বিদ্যুৎ নিশ্চিত করার জন্য গ্রামীণ এবং অনুন্নত এলাকায় বিদ্যুতের গ্রিড সম্প্রসারিত করা। |
জ্বালানি দক্ষতা বাড়াতে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে সৌর, বায়ু এবং পানিবিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলিকে প্রচার করা। | ||
৬। | টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট সংযোগ | ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা সহজতর করতে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিস্তৃত করা। |
টেলিকমিউনিকেশন পরিষেবাগুলির কভারেজ এবং গতি উন্নত করতে মোবাইল ফোন টাওয়ার এবং ব্রডব্যান্ড অবকাঠামো ইনস্টল করা। | ||
৭। | স্কুল নির্মাণ এবং শিক্ষাগত সুবিধা | শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করার জন্য নতুন স্কুল, শ্রেণীকক্ষ, লাইব্রেরি এবং শিক্ষাগত সুবিধা তৈরি করা। |
শিক্ষার জন্য বিল্ডিং মেরামত, ডেস্ক, চেয়ার এবং শিক্ষা উপকরণ স্থাপন সহ বিদ্যমান স্কুল অবকাঠামো উন্নত করা। | ||
৮। | স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা এবং হাসপাতাল | স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলি প্রসারিত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা ফলাফল উন্নত করতে নতুন স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা, ক্লিনিক এবং হাসপাতাল নির্মাণ। |
স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ এবং রোগীর যত্ন উন্নত করতে চিকিৎসা সরঞ্জাম, সরবরাহ এবং প্রশিক্ষিত কর্মীদের দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা সুবিধাগুলি সজ্জিত করা। | ||
৯। | আবাসন ও আশ্রয় প্রকল্প | গৃহহীন ব্যক্তি, স্বল্প আয়ের পরিবার এবং দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন ইউনিট, আশ্রয়কেন্দ্র এবং ক্রান্তিকালীন আবাসন নির্মাণ। |
ব্যক্তি এবং পরিবারকে নিরাপদ এবং স্থিতিশীল আবাসন নিশ্চিত করতে সাহায্য করার জন্য আবাসন সহায়তা, বন্ধকী ভর্তুকি এবং ভাড়া সহায়তা প্রদান। | ||
১০। | কমিউনিটি সেন্টার এবং পাবলিক স্পেস | সামাজিক সংহতি, কমিউনিটির সম্পৃক্ততা, এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রচারের জন্য কমিউনিটি সেন্টার, বিনোদনমূলক সুবিধা, পার্ক এবং সবুজ স্থান স্থাপন করা। |
সমস্ত বয়সের লোকেদের জন্য একত্রিত হতে, যোগাযোগ করতে এবং বিনোদনমূলক এবং অবসর ক্রিয়াকলাপে অংশগ্রহণের জন্য নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পাবলিক স্পেস তৈরি করা। | ||
১১। | দুর্যোগ সহনশীলতা এবং মোকাবিলার উদ্যোগ | অবকাঠামোর সহনশীলতা জোরদার করার জন্য এবং ভূমিকম্প, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও হারিকেনসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব প্রশমিত করার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা। |
দুর্যোগের সময় কমিউনিটির নিরাপত্তা এবং মঙ্গল নিশ্চিত করার জন্য প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা, জরুরী প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনা এবং সরিয়ে নেওয়ার পথ তৈরি করা। | ||
৪.২৭ পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন | ||
১। | বনায়ন ও বনায়ন কর্মসূচি | বন উজাড় বা ক্ষয়প্রাপ্ত এলাকা পুনরুদ্ধার এবং জীববৈচিত্র্য বৃদ্ধির জন্য বৃক্ষ রোপণের উদ্যোগ সংগঠিত করা। |
পুনঃবনায়ন প্রচেষ্টার নিমিত্ত নার্সারি এবং বীজ ব্যাংক স্থাপন করা। | ||
২। | বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রকল্প | ল্যান্ডফিলের বর্জ্য কমাতে এবং সম্পদের দক্ষতা বাড়াতে বর্জ্য হ্রাস, পুনর্ব্যবহার এবং কম্পোস্টিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা। |
বর্জ্য পৃথকীকরণ, সঠিক নিষ্পত্তির পদ্ধতি এবং পুনর্ব্যবহার করার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান পরিচালনা করা। | ||
৩। | পানি সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা | পানি-সংরক্ষণ কৌশল, যেমন বৃষ্টির পানি সংগ্রহ, পানি-দক্ষ সেচ ব্যবস্থা, এবং খরা-প্রতিরোধী ফসলের প্রচার। |
মিঠা পানির উৎস রক্ষা, মাটির ক্ষয় রোধ এবং পানির গুণমান উন্নত করার জন্য ওয়াটারশেড ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। | ||
৪। | টেকসই কৃষি এবং কৃষি বনায়ন | জৈব কৃষি, কৃষি বনায়ন এবং সমন্বিত কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনার মতো টেকসই কৃষি পদ্ধতি গ্রহণে উৎসাহিত করা। |
মৃত্তিকা সংরক্ষণ, ফসল ঘূর্ণন, এবং পানি-দক্ষ সেচ কৌশল সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষণ এবং সহায়তা প্রদান। | ||
৫। | জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং বাসস্থান পুনরুদ্ধার | বিপন্ন প্রজাতি এবং তাদের আবাসস্থল রক্ষার জন্য সংরক্ষিত এলাকা, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং পরিবেশগত করিডোর স্থাপন করা। |
জলাভূমি, ম্যানগ্রোভ এবং প্রবাল প্রাচীরের মতো অবক্ষয়িত বাস্তুতন্ত্রের পুনর্বাসনের জন্য বাসস্থান পুনরুদ্ধার প্রকল্প পরিচালনা করা। | ||
৬। | নগর সবুজায়ন এবং টেকসই নগর | শহুরে জীববৈচিত্র্য বাড়ানো এবং শহুরে তাপ-দ্বীপের প্রভাব প্রশমিত করতে সবুজ অবকাঠামো, শহুরে পার্ক এবং সবুজ স্থানের প্রচার করা। |
টেকসই নগর পরিকল্পনা চর্চাকে সমর্থন করা যা গণপরিবহন, বিদ্যৎ ও জ্বালানি দক্ষ ভবন এবং পথচারী-বান্ধব পরিবেশকে অগ্রাধিকার দেয়। | ||
৪.২৮ জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন এবং অভিযোজন | ||
১। | নবায়নযোগ্য শক্তি উদ্যোগ | সৌর, বায়ু, পানিবিদ্যুৎ এবং ভূ-তাপীয় শক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলি গ্রহণের প্রচার করা। |
গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কমিউনিটি-নেতৃত্বাধীন পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রকল্প এবং বিকেন্দ্রীভূত শক্তি সমাধানে সহায়তা করা। | ||
২। | কার্বন ভারসাম্য রক্ষা এবং কার্বন নির্গমন হ্রাস প্রোগ্রাম | পুনঃবনায়ন প্রকল্প, কার্বনকে কঠিন বা তরলে রূপান্তরের (carbon sequestration) নিমিত্ত প্রকল্প, এবং পরিছন্ন জ্বালানিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে তাদের কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস করতে ব্যক্তি, ব্যবসা এবং সংস্থাগুলিকে উৎসাহিত করা। |
গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শক্তি দক্ষতা ব্যবস্থা এবং সবুজ প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করা। | ||
৩। | জলবায়ু সহনশীলতা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি | জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপদের প্রভাবগুলি প্রশমিত করার জন্য জলবায়ু- সহনশীল অবকাঠামো, প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যবস্থা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস পরিকল্পনার উন্নয়ন। |
জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে তাদের সহনশীলতা এবং অভিযোজন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা তৈরি করা। | ||
৪। | শিক্ষা ও সচেতনতামূলক প্রচারণা | জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন এবং অভিযোজন কৌশলগুলোর গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে শিক্ষামূলক কর্মসূচি, কর্মশালা, এবং জনসাধারণের প্রচার প্রচারণা পরিচালনা করা। |
জলবায়ু সাক্ষরতা বৃদ্ধি করা এবং ব্যক্তিদের তাদের কার্বন ফুটপ্রিন্ট হ্রাস করতে পদক্ষেপ নিতে এবং জলবায়ু-বান্ধব নীতিগুলির পক্ষে সমর্থন করার জন্য ক্ষমতায়ন করা। | ||
৪.২৯ প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা | ||
১। | সংরক্ষিত এলাকা এবং সংরক্ষণ | জীববৈচিত্র্য, ইকোসিস্টেম পরিষেবা এবং প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণের জন্য সংরক্ষিত এলাকা, জাতীয় উদ্যান এবং সামুদ্রিক অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করা। |
সংরক্ষণ প্রচেষ্টা এবং টেকসই সম্পদ ব্যবস্থাপনা অনুশীলনে স্থানীয় কমিউনিটিকে জড়িত করা। | ||
২। | টেকসই মৎস্যচাষ ও জলজ চাষ | সামুদ্রিক সম্পদের দীর্ঘমেয়াদী কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য টেকসই মাছ ধরার চর্চা, সামুদ্রিক সংরক্ষণ এবং দায়িত্বশীল জলজ চাষের প্রচার। |
মৎস্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা, এবং বাস্তুতন্ত্র-ভিত্তিক মৎস্য ব্যবস্থাপনায় পন্থা সমর্থনকারী কার্যক্রম। | ||
৩। | ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা এবং টেকসই বনায়ন | ভূমি ব্যবহারের পরিকল্পনার কৌশল বাস্তবায়ন করা যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সংরক্ষণের উদ্দেশ্যগুলির ভারসাম্য বজায় রাখে। |
বন বাস্তুতন্ত্র রক্ষা এবং বাস্তুতন্ত্রের পরিষেবাগুলি বজায় রাখার জন্য টেকসই বনায়ন চর্চা, যেমন বাচাইকৃত পদ্ধতিতে কাঠ সংগ্রহ, পুনঃবনায়ন, এবং বন সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম গ্রহণ করা। | ||
৪। | পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং সুরক্ষা | বিশুদ্ধ পানিতে ন্যায়সঙ্গত অধিগম্যতা নিশ্চিত করতে, পানির গুণমান রক্ষা করতে এবং মিঠা পানির বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা। |
জলের ঘাটতি এবং দূষণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জলাশয় সুরক্ষা উদ্যোগ, নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প, এবং পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা প্রচার করা। | ||
৫। | বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং সংরক্ষণ | বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার প্রকল্প, বাসস্থান সংরক্ষণ উদ্যোগ, এবং অবক্ষয়িত ল্যান্ডস্কেপগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করতে এবং বাস্তুতন্ত্রের সহনশীলতাকে উন্নত করার জন্য পরিবেশগত পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা। |
স্থানীয় কমিউনিটি, আদিবাসীদের, এবং অংশীজনদের বাস্তুতন্ত্র ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াগুলিতে জড়িত করা। | ||
৪.৩০ দক্ষতা বৃদ্ধি | ||
১। | প্রক্রিয়া উন্নতির উদ্যোগ | সাংগঠনিক কর্মপ্রবাহ এবং ক্রিয়াকলাপে অদক্ষতা এবং বাধা চিহ্নিত করার জন্য প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ পরিচালনা করা। |
২। | প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি | সময় ব্যবস্থাপনা, সাংগঠনিক দক্ষতা, এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির কৌশলগুলির উপর প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম এবং কর্মশালা প্রদান করা। |
কর্মচারী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকায় তাদের দক্ষতা এবং কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য পেশাদার বিকাশের সুযোগ প্রদান করা। | ||
৩। | জ্বালানি দক্ষতা এবং সংরক্ষণ | জ্বালানি সংরক্ষণ এবং দক্ষতার উন্নতির সুযোগ চিহ্নিত করার জন্য জ্বালানি নিরীক্ষা এবং মূল্যায়ন পরিচালনা করা। |
জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা, যেমন জ্বালানি-দক্ষ আলো ইনস্টল করা, HVAC সিস্টেম অপ্টিমাইজ করা এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি প্রযুক্তি গ্রহণ করা। | ||
৪। | সাপ্লাই চেইন অপ্টিমাইজেশান | ইনভেন্টরি খরচ কমাতে, লিড টাইম কমাতে এবং সাপ্লাই চেইন সহনশীলতা বাড়াতে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট প্রসেস অপ্টিমাইজ করা। |
সরবরাহকারী, পরিবেশক, এবং সরবরাহকারী অংশীদারদের সাথে সমন্বয়, দৃশ্যমানতা, এবং সাপ্লাই চেইন জুড়ে প্রতিক্রিয়াশীলতা উন্নত করতে সহযোগিতা করা। | ||
৪.৩১ বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি | ||
১। | STEM শিক্ষা এবং আউটরিচ প্রোগ্রাম | বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, এবং গণিত (STEM) শিক্ষা কার্যক্রম, কর্মশালা, এবং যুবকদের মধ্যে STEM শাখার প্রতি আগ্রহ ও আবেগকে অনুপ্রাণিত করার জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। |
হাতে-কলমে শেখার অভিজ্ঞতা, ল্যাবরেটরি সুবিধা, এবং STEM ক্ষেত্রে মেন্টরশিপের সুযোগ প্রদান করা। | ||
২। | ডিজিটাল লিটারেসি এবং আইটি প্রশিক্ষণ | ডিজিটাল সাক্ষরতা প্রোগ্রাম এবং আইটি প্রশিক্ষণ কোর্স অফার করা। |
সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য কম্পিউটার ল্যাব, ইন্টারনেট সংযোগ এবং সফ্টওয়্যার অ্যাপ্লিকেশনগুলি সহজলভ্য করা। | ||
৩। | গবেষণা ও উন্নয়ন উদ্যোগ | উদীয়মান প্রযুক্তি, বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন, এবং আন্তঃবিভাগীয় ক্ষেত্রগুলিতে গবেষণা এবং উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে সহায়তা করা। |
উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত উন্নতির জন্য একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, গবেষণা কেন্দ্র এবং শিল্প অংশীদারদের সাথে সহযোগিতা করা। | ||
৪। | ওপেন সোর্স সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট | ওপেন সোর্স সফ্টওয়্যার প্রকল্প এবং প্ল্যাটফর্মের উন্নয়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণে অবদান রাখা যা সহযোগিতা, স্বচ্ছতা এবং সহজলভ্য করে। |
ওপেন সোর্স সফ্টওয়্যার বিকাশে স্বেচ্ছাসেবক এবং উৎসাহীদের জড়িত করার জন্য হ্যাকাথন, কোডিং ক্যাম্প এবং বিকাশকারী কমিউনিটির আয়োজন করা। | ||
৫। | সাইবার নিরাপত্তা সচেতনতা এবং প্রশিক্ষণ | ব্যক্তি, সংস্থা এবং কমিউনিটির মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা হুমকি, এবং ঝুঁকি কমানোর কৌশল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। |
ডিজিটাল নিরাপত্তা সচেতনতা এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য সাইবার নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ এবং সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম প্রদান করা। | ||
৪.৩২ বৃত্তিমূলক কার্যক্রম | ||
১। | দক্ষতা প্রশিক্ষণ এবং সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম | বিভিন্ন ব্যবসা এবং পেশায় বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম এবং সার্টিফিকেশন কোর্স অফার করা, যেমন কাঠমিস্ত্রি, বৈদ্যুতিক কাজ, ওয়েল্ডিং, মেরামত ইত্যাদি। |
ব্যবহারিক দক্ষতা এবং দক্ষতা বিকাশের জন্য হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, শিক্ষানবিশ সুযোগ, এবং চাকরির সময় শেখার অভিজ্ঞতা প্রদান করা। | ||
২। | উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচী | উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোক্তাদের পরামর্শদান, ব্যবসায়িক কোচিং, এবং তাদের নিজস্ব উদ্যোগ চালু করতে এবং বৃদ্ধি করতে সহায়তা করা। |
ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, বিপণন, অর্থ, এবং অপারেশন পরিচালনার মতো বিষয়গুলিতে উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম, কর্মশালা এবং সেমিনার অফার করা। | ||
৩। | অস্থায়ী চাকরির সুযোগ এবং ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং পরিষেবা | চাকরি প্রার্থীদের বিভিন্ন শিল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগের সাথে সংযুক্ত করার জন্য চাকরির নিয়োগ পরিষেবা, চাকরি মেলা, এবং নিয়োগের ইভেন্টগুলি সহজতর করা। |
কর্মজীবন কাউন্সেলিং প্রদান করা, লেখালেখির সাহায্য শুরু করা, এবং ব্যক্তিদের ক্যারিয়ারের বিকল্পগুলি অন্বেষণ করতে এবং চাকরির বাজারে নেভিগেট করতে সাহায্য করার জন্য ইন্টারভিউ প্রস্তুতি কর্মশালা। | ||
৪। | কর্মশক্তি উন্নয়ন উদ্যোগ | কর্মশক্তির চাহিদা এবং শিল্পের প্রবণতাগুলির সাথে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামগুলি সারিবদ্ধ করতে নিয়োগকর্তা, শিল্প সমিতি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সহযোগিতা করা। |
অংশীদারিত্ব এবং শিক্ষানবিশ প্রোগ্রামগুলিকে উৎসাহিত করা যা শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের মধ্যে ব্যবধান পূরণ করে, উচ্চ-চাহিদা সেক্টরে সফল ক্যারিয়ারের জন্য ব্যক্তিদের প্রস্তুত করে। | ||
৫। | লাইফ স্কিল এবং সফট স্কিল ট্রেনিং | ব্যক্তিগত যোগাযোগ, টিমওয়ার্ক, সমস্যা সমাধান এবং নেতৃত্বের ক্ষমতা বাড়াতে জীবন দক্ষতা কর্মশালা এবং সফট স্কিল ট্রেনিং সেশন অফার করা। |
ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে সফল হতে সাহায্য করার জন্য আর্থিক স্বাক্ষরতা প্রশিক্ষণ, সময় ব্যবস্থাপনা এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ওয়ার্কশপের মতো সহায়তা পরিষেবা প্রদান করা। | ||
৪.৩৩ সমাজকল্যাণ | ||
১। | কমিউনিটি উন্নয়ন কর্মসূচী | স্থানীয় চাহিদা মোকাবেলা এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য কমিউনিটি-ভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা, যেমন অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবার সহলভ্যতা, এবং শিক্ষা উদ্যোগ। |
অগ্রাধিকার চিহ্নিত করতে, সম্পদ বরাদ্দ করতে এবং টেকসই সমাধান বাস্তবায়নের জন্য অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় কমিউনিটির সদস্যদের জড়িত করা। | ||
২। | দারিদ্র্য বিমোচনের উদ্যোগ | খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি, আর্থিক সহায়তা এবং জীবিকা সহায়তার মাধ্যমে দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসকারী ব্যক্তি এবং পরিবারকে সহায়তা প্রদান করা। |
স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের ক্ষমতায়নের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, চাকরির নিয়োগ পরিষেবা এবং ক্ষুদ্রঋণের সুযোগ প্রদান করা। | ||
৩। | গৃহহীন আশ্রয় এবং সহায়তা পরিষেবা | গৃহহীনদের অস্থায়ী বাসস্থান, খাবার এবং সহায়ক পরিষেবা প্রদানের জন্য গৃহহীন আশ্রয়কেন্দ্র এবং ট্রানজিশনাল হাউজিং সুবিধা পরিচালনা করা। |
গৃহহীন ব্যক্তিদের আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, এবং কর্মসংস্থানের সুযোগগুলোতে অধিগম্যতা সহায়তা করার জন্য কেস ম্যানেজমেন্ট, কাউন্সেলিং এবং সামাজিক পরিষেবাগুলিতে রেফারেল প্রদান করা। | ||
৪। | দুর্যোগ ত্রাণ এবং মানবিক সহায়তা | প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মানবিক সংকট, এবং জরুরী ত্রাণ সরবরাহ, চিকিৎসা সহায়তা, এবং ক্ষতিগ্রস্ত কমিউনিটির জন্য আশ্রয় প্রদান করে জরুরী পরিস্থিতিতে সাড়া দেওয়া। |
স্বেচ্ছাসেবকদের সংগঠিত করা, সরবরাহের সমন্বয় করা এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে সময়মত এবং কার্যকর দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া প্রচেষ্টা প্রদানের জন্য সহযোগিতা করা। | ||
৫। | মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং সমর্থন | শিক্ষা প্রচারাভিযান, সহায়তা গোষ্ঠী এবং সংকট হটলাইনের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা, কলঙ্ক হ্রাস, এবং মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলিতে অ্যাক্সেসের প্রচার করা। |
মানসিক অসুস্থতা, ট্রমা, বা মানসিক যন্ত্রণার সাথে লড়াই করা ব্যক্তিদের কাউন্সেলিং, থেরাপি, এবং মানসিক যত্ন প্রদান করা। | ||
৪.৩৪ গবেষণা কার্যক্রম | ||
১। | বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং উদ্ভাবন | জ্ঞান প্রসারিত করতে, জটিল সমস্যার সমাধান করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা, প্রযুক্তি, সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং পরিবেশ বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবন চালানোর জন্য বৈজ্ঞানিক গবেষণা অধ্যয়ন এবং পরীক্ষা পরিচালনা করা। |
বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারকে এগিয়ে নিতে এবং গবেষণার ফলাফলগুলিকে ব্যবহারিক প্রয়োগে অনুবাদ করতে একাডেমিক প্রতিষ্ঠান, গবেষণা সংস্থা এবং শিল্প অংশীদারদের সাথে সহযোগিতা করা। | ||
২। | স্বাস্থ্য গবেষণা এবং মহামারী ও অতিমারী সংক্রান্ত গবেষণা | গবেষণা, নজরদারি সিস্টেম, এবং ডেটা বিশ্লেষণের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সমস্যা, রোগের প্রাদুর্ভাব, এবং মহামারী ও অতিমারী সংক্রান্ত প্রবণতা তদন্ত করা। |
রোগের প্রতিরোধ, নির্ণয় এবং চিকিৎসা উন্নত করতে ক্লিনিকাল ট্রায়াল, জনস্বাস্থ্য হস্তক্ষেপ, এবং স্বাস্থ্য আচরণ গবেষণা পরিচালনা করা। | ||
৩। | সামাজিক বিজ্ঞান এবং নীতি গবেষণা | নীতি সিদ্ধান্ত এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসচী ও অন্যান্য সামাজিক ইন্টারভেনসন্সসমূহ জানাতে গুণগত এবং পরিমাণগত গবেষণা পদ্ধতির মাধ্যমে সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক ঘটনা পরীক্ষা করা। |
জনমত, দৃষ্টিভঙ্গি, এবং সামাজিক সমস্যা এবং নীতি অগ্রাধিকারের সাথে সম্পর্কিত আচরণের তথ্য সংগ্রহের নিমিত্ত সমীক্ষা, সাক্ষাৎকার এবং ফোকাস গ্রুপ পরিচালনা করা। | ||
৪। | পরিবেশগত অধ্যয়ন এবং সাসটেইনেবেলিটি গবেষণা | আন্তঃবিষয়ক গবেষণা পদ্ধতি (interdisciplinary research approaches), মডেলিং কৌশল এবং দূরবর্তী অনুধাবন প্রযুক্তির (remote sensing technologies) মাধ্যমে পরিবেশগত প্রভাব, প্রতিবেশগত প্রবণতা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের গতিবিধি মূল্যায়ন করা। |
সংরক্ষণ কৌশল এবং টেকসই উন্নয়ন নীতি অবহিত করার জন্য জীববৈচিত্র্য, বাস্তুতন্ত্র পরিষেবা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করা। | ||
৫। | শিক্ষা গবেষণা এবং শিক্ষাদান অধ্যয়ন | শিক্ষা ও শিক্ষাদান বিষয়ক যেকোনো প্রকারের গবেষণা ও অধ্যয়ন। |
৬। | প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন অধ্যয়ন | প্রযুক্তি মূল্যায়ন, দূরদর্শিতা বিশ্লেষণ এবং প্রবণতা পূর্বাভাসের মাধ্যমে উদীয়মান প্রযুক্তি, ডিজিটাল প্রবণতা এবং আমূল পরিবর্তনকারী উদ্ভাবনগুলি অনুসন্ধান করা। |
দায়িত্বশীল উদ্ভাবন এবং ডিজিটাল সাক্ষরতা তরান্বিত করতে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সামাজিক, নৈতিক এবং নীতিগত প্রভাব পরীক্ষা করা। | ||
৭। | নীতি বিশ্লেষণ এবং অ্যাডভোকেসি সংক্রান্ত গবেষণা | জননীতি, আইনী কাঠামো এবং শাসন কাঠামো বিশ্লেষণ করে তাদের কার্যকারিতা, ন্যায়পরায়ণতা এবং বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর উপর প্রভাব মূল্যায়ন করা। |
কর সংক্রান্ত গবেষণা ও করশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা। | ||
নীতি সংস্কার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের উদ্যোগকে তরান্বিত করতে প্রমাণ-ভিত্তিক অ্যাডভোকেসি প্রচারাভিযানে অংশীজন, নীতিনির্ধারক এবং নাগরিক সমাজ সংস্থাকে জড়িত করা বা নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ। | ||
৪.৩৫ বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর উন্নয়ন ও সুরক্ষা | ||
১। | সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ এবং প্রচার | বিভিন্ন নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্য, রীতিনীতি এবং ভাষা উদযাপনের জন্য সাংস্কৃতিক উৎসব, শিল্প প্রদর্শনী, এবং ঐতিহ্যগত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। |
ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রেরণের জন্য মৌখিক ইতিহাস, ঐতিহ্যগত জ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক অনুশীলন নথিভুক্ত করা। | ||
২। | কমিউনিটির ক্ষমতায়ন এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি | কমিউনিটি-নেতৃত্বাধীন উন্নয়ন উদ্যোগগুলিকে সহজতর করা যা নৃ-গোষ্ঠীগুলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে এবং তাদের অধিকারের পক্ষে সমর্থন করে। |
সামাজিক, অর্থনৈতিক, এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য নৃ-গোষ্ঠীগুলোর সক্ষমতা জোরদার করার জন্য প্রশিক্ষণ, শিক্ষা এবং নেতৃত্বের উন্নয়ন কর্মসূচি প্রদান করা। | ||
৩। | মানবাধিকার অ্যাডভোকেসি এবং আইনি সহায়তা | আইনগত ওকালতি, নীতি গবেষণা, এবং জনসচেতনতামূলক প্রচারণার মাধ্যমে সংখ্যালঘু অধিকার, নৃ-গোষ্ঠীর ভূমি অধিকার, এবং সাংস্কৃতিক অধিকার সুরক্ষার জন্য সমর্থন করা। |
বৈষম্য, বাস্তুচ্যুতি, বা জমি দখলের সম্মুখীন নৃ-গোষ্ঠীগুলোকে আইনি সহায়তা, প্রতিনিধিত্ব এবং ওকালতি সহায়তা প্রদান। | ||
৪। | ভূমির অধিকার | আইনি সংস্কার, ভূমি সীমানা নির্ধারণ এবং কমিউনিটি ম্যাপিং উদ্যোগের মাধ্যমে আদিবাসী এবং নৃ-গোষ্ঠীগুলোর জন্য ভূমির মেয়াদের অধিকার এবং জমির শিরোনাম সুরক্ষিত করার প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা। |
ঐতিহ্যগত ভূমি অধিকার এবং অঞ্চলগুলিকে রক্ষা করার জন্য প্রথাগত ভূমি শাসন ব্যবস্থা, সাম্প্রদায়িক ভূমি ব্যবস্থাপনা অনুশীলন এবং ভূমি শাসন প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা। | ||
৫। | শিক্ষা এবং ভাষা পুনরুজ্জীবন | মাতৃভাষা শিক্ষা, দ্বিভাষিক সাক্ষরতা কর্মসূচি, এবং আদিবাসী ভাষা এবং জ্ঞান ব্যবস্থা সংরক্ষণ ও পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সাংস্কৃতিক শিক্ষার উদ্যোগের প্রচার। |
জাতিগত পরিচয় এবং ভাষাগত বৈচিত্র্যকে উন্নীত করার জন্য কমিউনিটি-ভিত্তিক স্কুল, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, এবং ভাষা নিমজ্জন কর্মসূচি (language immersion programs) প্রতিষ্ঠা করা। | ||
৬। | স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক পরিষেবা | প্রত্যন্ত বা অপ্রত্যাশিত এলাকায় বসবাসকারী নৃ-গোষ্ঠীগুলোর জন্য স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য কর্মসূচি এবং মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা উন্নত করা। |
স্বাস্থ্যের বৈষম্য দূর করতে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পুষ্টি কর্মসূচি, বিশুদ্ধ পানি প্রকল্প এবং স্যানিটেশন সুবিধা সহ সামাজিক পরিষেবা প্রদান করা। | ||
৪.৩৬ বিবিধ | ||
১। | বিবিধ | জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সময় সময় স্বীকৃত অন্যান্য সাধারণ গণ-উপযোগসমূহের উন্নতি ও প্রসারকল্পে গৃহীত কার্যাদি। |
৬.৯.৭ দাতব্য প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক গৃহ-সম্পত্তি হতে গৃহীত ভাড়া আয় কি করমুক্ত?
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসিল এর অংশ ১ এর দফা (১১) নিম্নরূপ, যথা:
“(১১) এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কর্তৃক নিবন্ধিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্র ব্যতীত, সম্পূর্ণভাবে দাতব্য বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ধারণকৃত ট্রাস্ট বা অন্যবিধ আইনগত বাধ্যবাধকতার অধীন গৃহ-সম্পত্তি হইতে অর্জিত আয়, যদি উক্ত আয়-
(ক) সংশ্লিষ্ট আয়বর্ষে বাংলাদেশে দাতব্য বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়; অথবা
(খ) কোনো দাতব্য বা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত না হয়, কিন্তু বাংলাদেশে এইরূপ উদ্দেশ্যপূরণকল্পে পুঞ্জীভূত করা হয় বা চূড়ান্তভাবে পৃথক করিয়া রাখা হয়, এবং-
(অ) এইরূপ আয় কী কারণে এবং কত সময়ের জন্য পুঞ্জীভূত বা পৃথক করিয়া রাখা হইয়াছে, উহা উপকর কমিশনারকে অবহিত করা হয়;
(আ) উপ-দফা (অ) এ উল্লেখিত মেয়াদ ১০ (দশ) বৎসরের অধিক না হয়;
(ই) এই রকম পুঞ্জীভূত বা আলাদা করিয়া রাখা অর্থ সরকারি সিকিউরিটিতে অথবা এই উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত অন্য যেকোনো সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ করা হয়, অথবা ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের যেকোনো হিসাবে জমা রাখা হয়, অথবা এইরূপ কোনো তফসিলি ব্যাংকের হিসাবে জমা রাখা হয় যাহার ৫১% (একান্ন শতাংশ) বা ইহার অধিক শেয়ার সরকার কর্তৃক ধারণকৃত।”
অর্থাৎ কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠান গৃহ-সম্পত্তি হতে কোনো ভাড়া আয় প্রাপ্ত হলে তা উক্ত দফা ১১-তে উল্লেখিত শর্তাদি পরিপালন সাপেক্ষে মোট আয় পরিগণনা হতে বাদ যাবে। তবে, এরূপ অব্যাহতি এনজিও বিষয়ক ব্যুরো কর্তৃক নিবন্ধিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।
৬.১০ “ফাইন্যান্স কোম্পানি” এর সংজ্ঞা সংযোজন
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (৫৭ক) সংযোজনের মাধ্যমে “ফাইন্যান্স কোম্পানি” এর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। এই সংজ্ঞানুযায়ী “ফাইন্যান্স কোম্পানি” অর্থ ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০২৩ (২০২৩ সনের ৫৯ নং আইন) এর ধারা ২ এর দফা (১৭) তে সংজ্ঞায়িত কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি।
আয়কর আইন, ২০২৩ এ পূর্বে ব্যবহৃত “আর্থিক প্রতিষ্ঠান” শব্দগুলোর পরিবর্তে এখন হতে “ফাইন্যান্স কোম্পানি” শব্দগুলো ব্যবহৃত হবে।
৬.১১ “লভ্যাংশ” এর সংজ্ঞায় সংশোধন
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (৮১) এর উপ-দফা (ছ) তে উল্লেখিত “প্রাইভেট” শব্দটি বিলোপ করা হয়েছে এবং শর্তাংশ (ই) তে উল্লেখিত “উপ-দফা (ঙ)” শব্দ ও বন্ধনীর পরিবর্তে “উপ-দফা (ছ)” শব্দ ও বন্ধনী প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
উক্ত সংশোধনীর পূর্বে ধারা ২ এর দফা (৮১) এর উপ-দফা (ছ) নিম্নরূপ ছিলো, যথা:-
“(ছ) কোনো প্রাইভেট কোম্পানি উহার মালিকানাধীন পুঞ্জিভূত মুনাফা হইতে কোনো শেয়ারহোল্ডারগণকে অগ্রিম বা ঋণ হিসাবে পরিশোধিত যেকোনো পরিমাণ অর্থ, উহা কোম্পানির পরিসম্পদের অংশ হোক বা না হোক, অথবা এইরূপ কোনো শেয়ারহোল্ডারের পক্ষে বা ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য এইরূপ কোম্পানি কর্তৃক পরিশোধিত যেকোনো পরিমাণ অর্থ,”
উক্ত সংশোধনীর ফলে ধারা ২ এর দফা (৮১) এর উপ-দফা (ছ) নিম্নরূপ হলো, যথা:-
“(ছ) কোনো কোম্পানি উহার মালিকানাধীন পুঞ্জিভূত মুনাফা হইতে কোনো শেয়ারহোল্ডারগণকে অগ্রিম বা ঋণ হিসাবে পরিশোধিত যেকোনো পরিমাণ অর্থ, উহা কোম্পানির পরিসম্পদের অংশ হোক বা না হোক, অথবা এইরূপ কোনো শেয়ারহোল্ডারের পক্ষে বা ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য এইরূপ কোম্পানি কর্তৃক পরিশোধিত যেকোনো পরিমাণ অর্থ,”
অর্থাৎ, ২০২৪-২০২৫ করবর্ষ হতে কোনো কোম্পানি, তার ধরণ নির্বিশেষে, তার মালিকানাধীন পুঞ্জিভূত মুনাফা হতে কোনো শেয়ারহোল্ডারকে অগ্রিম বা ঋণ হিসাবে পরিশোধিত যেকোনো পরিমাণ অর্থ, অথবা কোনো শেয়ারহোল্ডারের পক্ষে বা ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য কোম্পানি কর্তৃক পরিশোধিত যেকোনো পরিমাণ অর্থ লভ্যাংশ বলে গণ্য হবে।
ধারা ২ এর দফা (৮১) এর শর্তাংশ (ই) তে উল্লেখিত “উপ-দফা (ঙ)” শব্দ ও বন্ধনীর পরিবর্তে “উপ-দফা (ছ)” প্রতিস্থাপনের ফলে শর্তাংশ (ই) নিম্নরূপ হলো, যথা:-
“(ই) কোম্পানি কর্তৃক পরিশোধকৃত কোনো লভ্যাংশ যাহা ইতঃপূর্বে পরিশোধিত সম্পূর্ণ বা আংশিক কোনো অর্থের বিপরীতে কোম্পানি কর্তৃক সমন্বয় করা হইয়াছে এবং উপ-দফা (ছ) এর অর্থে লভ্যাংশ হিসাবে বিবেচিত, যাহার ক্ষেত্রে উক্তরূপে সমন্বয় করা হইয়াছে ততটুকু;”
উদাহরণ ৩
জনাব অলোক ধ্রুব কোম্পানি ‘ক’ এর একজন শেয়ারহোল্ডার। ২০২০-২০২১ আয়বর্ষে তিনি কোম্পানি ‘ক’ হতে ১ (এক) কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেছিলেন। ২০২১-২০২২ করবর্ষে তার কর নির্ধারণকালে উক্ত ১ (এক) কোটি টাকা আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (৮১) এর উপ-দফা (ছ) অনুযায়ী লভ্যাংশ হিসাবে করারোপিত হয়েছিল। জনাব ধ্রুব ২০২৩-২০২৪ আয়বর্ষে কোম্পানি ‘ক’ হতে ২ (দুই) কোটি টাকার লভ্যাংশ প্রাপ্ত হন। কোম্পানি ‘ক’ উক্ত ২ কোটি টাকার লভ্যাংশের সাথে জনাব ধ্রুব কর্তৃক গৃহীত ঋণ ১ কোটি টাকার সমন্বয় করে এবং বাকী ১ কোটি টাকা জনাব ধ্রুবকে পরিশোধ করে। ২০২৪-২০২৫ করবর্ষে যদিও জনাব ধ্রুব ২ কোটি টাকার লভ্যাংশ প্রাপ্ত হন, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (৮১) এর শর্তাংশ (ই) অনুযায়ী কেবল ১ কোটি টাকা লভ্যাংশ হিসাবে বিবেচিত হবে।
৬.১২ “স্বীকৃত করদায়” এর সংজ্ঞা সংযোজন
আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ২ এর দফা (৮৯ক) সংযোজনের মাধ্যমে “স্বীকৃত করদায়” এর সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। এই সংজ্ঞানুযায়ী “স্বীকৃত করদায়” অর্থ দাখিলকৃত রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন এর ভিত্তিতে, ক্ষেত্রমত, ধারা ১৭৩, ১৭৪ বা ১৮১ অনুযায়ী পরিগণিত প্রদেয় আয়কর দায়।
স্বীকৃত করদায়ের সংজ্ঞা সংযোজনের ফলে বিরোধ নিষ্পন্নের বিভিন্ন ফোরামে এতদ্সম্পর্কিত আর কোনো অস্পষ্টতা তৈরীর সুযোগ নেই।
উদাহরণ ৪
জনাব নাজমা পারভিন ২০২৪-২০২৫ করবর্ষে ৩০,০০,০০০ টাকা কর পরিশোধ পূর্বক করদিবসের পর রিটার্ন দাখিল করেন। পরবর্তীকালে ১৮১ ধারায় রিটার্ন প্রসেসের সময় উপকর কমিশনার পর্যবেক্ষণ করেন যে, করদাতা ১৭৩ ধারা অনুযায়ী কর পরিশোধ করেছেন। করদাতার জন্য কর পরিশোধের ধারা হচ্ছে ১৭৪। উপ-কর কমিশনার অতিরিক্ত ৫,০০,০০০ টাকা রিটার্ন প্রসেসের মাধ্যমে করদাবী সৃষ্টি করেছেন। এক্ষেত্রে, ৩৫,০০,০০০ টাকা স্বীকৃত করদায় হিসাবে বিবেচিত হবে।
উদাহরণ ৫
মিজ তপমিতা চন্দ তনুশা ২০২৪-২০২৫ করবর্ষে ২৫,০০,০০০ টাকা কর পরিশোধপূর্বক রিটার্ন দাখিল করেন। তিনি ধারা ১৬৯ এর সকল বিধিবিধান পরিপালন করেন। মিজ তপমিতা চন্দ তনুশা কর্তৃক দাখিলকৃত রিটার্নের সাথে দাখিলকৃত ব্যাংক বিবরণীর জমার প্রেক্ষিতে উপ-কর কমিশনার ১৮১ ধারায় রিটার্ন প্রসেস পূর্বক অতিরিক্ত ১,৮০,০০০ টাকার দাবী নামা প্রেরণ করেন। উপ-কর কমিশনার কর্তৃক কৃত ১৮১ ধারায় রিটার্ন প্রসেস সঠিক হয়নি বিধায় অতিরিক্ত অংক স্বীকৃত করদায় হিসাবে গণ্য হবে না।